ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যানস গেমটার নাম নিশ্চয় শুনেছ। একবার হল কী, এই গেম খেলতে খেলতে মানুষজনের মাথা পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেল। তখন তারা রিয়েল লাইফেই ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যানস খেলা শুরু করে দিল। এখন ঢাকা শহরের উত্তরায় অবস্থান নিয়েছে স্ক্রু_ঢিলা ক্ল্যানের লিডার সাক্লাইন বাই। তো সে এখন চাই যাত্রাবাড়িতে অবস্থান নেওয়া তার কো-লিডার সাকিব বাই-কে খবর পাঠাতে যে, সে আজ রাতে উত্তরা এলাকায় বিশ্রাম নিবে, কাল সকালেই অ্যাটাক করবে মিরপুরে মাথা_নষ্ট ক্ল্যানের লিডার নাহিদ বাই-এর ঘাটিতে।
এখন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল হ্যারি পটারের প্যাঁচা। সে প্যাঁচার পায়ে চিঠি লাগিয়ে নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুমাতে গেল। এদিকে নাহিদ করলো কী প্যাঁচাটাকে জাদু-টোনা করে নিজের কাছে নিয়ে এসে চিঠিটা পড়ে জেনে গেল সাক্লাইনের অবস্থানের কথা। এরপর আর কী, সকালের আগেই ঘুমন্ত সাক্লাইন বাহিনীর উপর হামলে পড়লো…
তো এই কথা শুনে সাকিবের মন খুব খারাপ। সে চিন্তা করলো এভাবে চিঠি দেওয়াটা আর নিরাপদ না। তাকে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে চিঠি শত্রুর হাতে পড়লেও শত্রু সেটা পড়তে না পারে। এজন্য সে এবার চিঠি পাঠানোর নতুন একটা নিয়ম বানালো। সে তার ক্ল্যানের সব সদস্যকে বলে দিল যে, এখন থেকে সব চিঠি লেখা হবে উল্টোভাবে। অর্থাৎ কেউ যদি জানাতে চায়, “হাত ভেঙ্গে গেছে, ঠিক হয়ে যাবে। Pray for me.” তাহলে সে লিখবে “em rof yarP। বেযা য়েহ কঠি, ছেগে ঙ্গেভে তহা”
এখন শুধু তার ক্ল্যানের মানুষজনই জানে যে চিঠিটা উল্টো দিক থেকে পড়তে হবে। শত্রুরা জানে না, তাই চিঠি পড়তেও পারে না।
এখানে সাকিব বাই যেটা করলো, সেটা হল এনক্রিপশন। চিঠি পাওয়ার পর বাকিরা যা করবে তা হল ডিক্রিপশন। আর এই যে “চিঠিটা বুঝতে হলে উল্টা দিক থেকে পড়তে হবে”-এটা হল সিক্রেট কী (What না, Key :p ), যা শুধু Data যে পাঠাবে এবং যার কাছে পাঠানো হয়েছে তার কাছে থাকবে।
এবার কেতাবী সংজ্ঞাগুলো জেনে নেওয়া যাক!
প্লেইন টেক্সটঃ যে ডাটা এমনিতেই পড়া যায়, সেটাই প্লেইন টেক্সট। যেমন, “হাত ভেঙ্গে গেছে, ঠিক হয়ে যাবে। Pray for me.”
এনক্রিপশনঃ প্লেইন টেক্সটটাকে দুর্বোধ্য একটা রুপ দেওয়ার প্রক্রিয়াটা হল এনক্রিপশন।
সাইফার টেক্সটঃ এনক্রিপশনের ফলে যে দুর্বোধ্য টেক্সটটা পাওয়া যায়।
ডিক্রিপ্পশনঃ সাইফার টেক্সটকে প্লেইন টেক্সট-এ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে বলে ডিক্রিপশন।
তবে আমরা যেই উদাহারণটা দিয়েছিলাম, তা খুবই দুর্বল একটা এনক্রিপশন। কারণ এটা ক্লাস ২-এ পড়া ছোট বোনকে দিলে সেও ডিক্রিপ্ট করে ফেলতে পারবে। আর সে তুলনায় নাহিদ তো জাদু টোনায় পারদর্শী এক মহা কাবিল!
ক্রিপ্টোগ্রাফি
(বিজ্ঞানের যে শাখায়) গণিতের সাহায্য নিয়ে ডাটা এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা হয়, তাই ক্রিপ্টোগ্রাফি। ক্রিপ্টোগ্রাফির ব্যবহার বর্তমানে বহুল প্রসারিত। গুরুত্বপূর্ন ইনফর্মেশন (ডাটার সমষ্টি হল ইনফর্মেশন) সংরক্ষন করে রাখা আর বিভিন্ন ভাবে (যেমন, ইন্টারনেট) এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো, সব ক্ষেত্রেই ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়, যাতে আন-অথোরাইজড কেউ সেটা বুঝতে না পারে।
অপরদিকে ক্রিপ্ট্যানালাইসিস হল সিক্যুরড কম্যুনিকেশন অ্যানালাইজ করে ব্রেক করে ফেলার বিজ্ঞান! এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেআইনী।
আর এই দুই বিজ্ঞানের সমষ্টি হল ক্রিপ্টোলজি।
যেভাবে কাজ করে
ক্রিপ্টোগ্রাফির মূল অস্ত্র হল একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক এলগোরিদম বা সাইফার, যা দ্বারা ডাটা এনক্রিপ্ট করা হয়, বা এনক্রিপ্টেড ডাটা ডিক্রিপ্ট করা হয়। এটা মূলত একটি ম্যাথমেটিকাল ফাংশন। এই এলগোরিদম কাজ করে একটি কী(Key)-এর সাথে। এই কী(Key) হতে আরে একটি শব্দ, সংখ্যা বা শব্দগুচ্ছ। একই প্লেইন টেক্সট বিভিন্ন Key-এর সাহায্যে বিভিন্ন সাইফার টেক্সটে রূপান্তরিত হবে।
এনক্রিপটেড ডাটার নিরাপত্তা নির্ভর করে দুইটি জিনিসের উপরঃ
(১) ক্রিপ্টোগ্রাফিক এলগরিদমটার শক্তি
(২) কী(Key)-এর নিরাপত্তা
প্রথাগত ভাবে একই কী-এর মাধ্যমেই এনক্রিপশন এবং ডিক্রিপশন-দু’টোই করা হয়।
বেসিক কিছু টার্মের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমেই এই পর্ব শেষ করছি। আগামী পর্বে আমরা জানবো ক্রিপ্টোগ্রাফির ক্রমবিকাশ সম্পর্কে!
আমাকে Attack hero বানানোর জন্য তোরে ধন্যবাদ :v @Muntasir
You’re welcome, জাদুটোনা-তে পারদর্শী নাহিদ বাই। :p
waiting for new article of this topic
ঈনশাআল্লাহ বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। 🙂
পরের পর্বের চমকের অপেক্ষায় রইলাম…
পরের পর্ব প্রকাশিত হয়েছে! 😀