শিরোনাম পড়ে শুরুতেই আমাদের মনে হবে,  Calculus এর সাথে “নুড়ী” পাথরের কী সম্পর্ক? প্রশ্ন আসা খুবই স্বাভাবিক, আর এই ক্যালকুলাস এর সাথে নুড়ী পাথরের কী সম্পর্ক এ বিষয়টি পরিষ্কার করতেই আমার এ লেখাটি। 🙂

Let’s Begin our Journey to the realm of Calculus 🙂

Calculus-এর আবিষ্কার নিয়ে অনেক দন্দ্ব আছে , আমরা এই ঝামেলায় না গিয়ে  গনিতের এই অসাধারণ বিষয় টা নিয়ে জানা শুরু করি । বই এর ভাষায়,

“খুবই ছোট বিষয় নিয়েই ক্যালকুলাস  কাজ করে, যেখানে একটি চলকের সাপেক্ষে অন্য চলক গুলো পরিবর্তিত  হয়”

মুসিবত,কি বললো  আর কি করতে হবে তার কোনো ধারণাই পেলাম না বলতে গেলে! আমরা এই সব কিতাবি ভাষা বুঝি না , আমরা সোজা মানুষ সোজা ভাবে সকল জিনিস শিখতে চাই। হ্যা,আগে ধারণাটা নিয়ে তারপর কিতাবি ভাষায় মুভ করবো,সবকিছুর পাশাপাশি কিতাবি ভাষাটারও প্রয়োজন আছে,তবে এর আগে ধারণাটাকে স্বচ্ছ না করে নয়!

ক্যালকুলাসঃ এর আভিধানিক অর্থ, “ছোটো / নুড়ি” । মূলত অনেক  ছোট জিনিস নিয়েই এর মূল কারবার । যেমন –

ধরি, একটি  ফাংশন, f(x) = (x – 2) / (x^2 – 4) ;

Function কী-এ বিষয়ে সাইটে  বেশ ভাল কিছু লেখা আছে, পড়ে নিলে ভাল। যাই হোক, টপিকে ফিরে আসি । আমরা সাধারনত যা ফাংশনে করে থাকি, x এর বিভিন্ন value-র জন্য f(x) এর মান বের করি । এখানে ও আমরা তাই করব । চলো, এর Graph টা কেমন হতে পারে তা দেখে আসি ।

Calculus graph - 1

Graph – 1

 

গ্রাফিং ক্যালকুলেটর এর জন্য ডেসমস এর জুড়ি নাই! আমরা এটাই ব্যবহার করি। 😀

ফাংশনটি সাধারণ ভাবেই কাজ করে। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপার, লেখটি একটি point বাদে সব পয়েন্ট এ ভ্যালু দেয়। ( x = – 2)  এ পয়েন্টে ফাংশনটির কোন value পাওয়া যায় না । কেন? কারণ, এ পয়েন্টটিতে  f(x) undefined হয়ে যায়!

( undefined মানে হচ্ছে অসংগায়িত। আর অনির্ণেয় মানে হচ্ছে indeterminate । এখানে undefined হয়েছে,indeterminate নয়। 0/0 , infinity/infinity , 0/infinity , infinity/0 এরা হচ্ছে indeterminate. )

তাহলে, x = -2 point এ কী আমরা কোন মান পাব ও না , কিন্ত ২ এর একদম কাছের কোন  পয়েন্ট,  -২.০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০……..১ অথবা – ১.৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯………………………………৯ এই পয়েন্ট গুলোর  চেয়ে ও কাছের কোন বিন্দুতে কি কোনও মান পাওয়া যায় না? এ রকম চিন্তা ভাবনা থেকে ই অতি ক্ষুদ্র জিনিস নিয়ে কাজ করা শুরু ।

আমরা সবাই ভাবছি, ক্যালকুলাস এর সাথে এই সব জিনিসের কী সম্পর্ক? আসলে আমরা এখনও ক্যালকুলাস নিয়ে কাজ শুরুই করি নাই। 😀 আমরা এখন বুঝার চেষ্টা করছি, কাছাকাছি বা এমন সব মান নিয়ে কাজ কী, এমন সব মান যে সব মান এ আমাদের ফাংশন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না ! যেমন, এখানে x = -2 বিন্দুতে আমরা কোনো  defined ভ্যালু পাইনি। কিন্ত আমি যে পয়েন্ট গুলোর কথা বললাম(আসলে আমি নিজে ও জানি না , কাছের কোনো পয়েন্ট এর কথা বলেছি 😛 )   এ সব পয়েন্ট এ কি কোন ও মান থাকবে না? অবশ্যই থাকবে । কারণ। গনিতের পরিভাষায়,  every point is unique, no point can be same. তাই আমরা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি,-2 এর যত কাছে ই নিই না কেন, ফাংশনটির র অবশ্য ই একটি মান থাকবে, কিন্তু সেই মান টি বের করব কীভাবে!

প্রথমে আমি সবাইকে গ্রাফ টি নিজের হাতে আঁকতে  অনুরোধ করব। গনিতের যে কোন কিছু ই নিজে না করলে মজা পাওয়া যায় না । তাই সবাই আমরা একটু কষ্ট করে আঁকি।আঁকা যদি হয়ে যায়,তাহলে এবার ক্যাল্কুলটের নিই। আমি যে মানগুলো বলি, একটু ক্যাল্কুলেটর এ বসাই । বেশ মজার ১ টা জিনিস পাবে আশা করি :

x = – 2.1 , f(x) = -10                                                              x = -1.9  ,f(x) = 10

x = -2.01, f(x) = – 100                                                          x = – 1.99,f(x) = 100

x = – 2.00001 ,f(x) =  – 100000                                        x = -1.99999,f(x) = -100000

.

.

.

(-2) এই পয়েন্ট ২ পাশে, (ছোট দিক থেকে – ২.০১ আর বড় দিক থেকে -১.৯৯) এই ২ দিক থেকে এ ফাংশনটির ভ্যালু এক হয়ে যাচ্ছে, তাহলে আমরা বলতে পারি, আমরা যে কোনো দিক থেকে যত (-২) বিন্দুর কাছে আসব, তত একটি,  certain value কাছে চলে যাব, এখানে এই মান টি অসীম।

এভাবে আমরা কোন পয়েন্টে এ সীমার মান /  Bounding Value/ Limiting Value বের করতে পারি। Limiting Value এ কথাটির মানে হল, আমরা আমদের x  এর মান ঐ পয়েন্টের, যত কাছে  নিয়ে যাব, ফাংশনটির মান ও একটি নির্দিষ্ট মানের কাছে চলে যাবে, আর এই লিমিটিং ভ্যালুই হল  ক্যালকুলাস এর প্রথম ভিত্তি । এটিকে প্রকাশ করা হয়,  lim f(x)  as x tends to a ,    মানে  আমাদের  x  এর ভ্যালু   a   এর যত নিকটে নিব, তখন,   f(x)   এর ভ্যালু কোন মানের কাছাকাছি যাবে, আমাদের উদাহরণে যেহেতু মান টা কেবল বেড়ে যাচ্ছে, তাই আমরা বলতে পারি,  x = -2 বিন্দুতে এই ফাংশনটির লিমিটিং ভ্যালু অসীম!

কিন্তু  আমরা যেহেতু গণিত কে ভালবাসি, তাই আরও গভীরে প্রবেশ করতে চাইবো এবং গণিতের মাধ্যমে একটি উপযুক্ত ব্যাখ্যা দাঁর করাতে চাইবো এটাই স্বাভাবিক! আমাদের প্রশ্ন, আমরা কেন,  x   এর ভ্যালু (-২) এর কাছে নিচ্ছি, কারন আমরা যেটি করতে চাই, -২ পয়েন্টে  f(x) এর মান বের করতে চাই, কিন্ত আমরা যেহেতু  directly value  বসাতে পারছি না, তাই -২ এর যত কাছে নেয়া সম্ভব, তত কাছে নিয়ে গিয়ে এর মান বের করার চেষ্টা করছি, আরেকটি জিনিস আমরা খেয়াল করি, আমরা আমাদের ”পয়েন্ট -২” এর দুই পাশেই মান বসিয়ে দেখছি, কারণটা কী?

কারণ, আমরা বলতে পারি , + এবং – দুই দিক থেকেই, আমরা (-২) পয়েন্ট এর কাছে আসতে পারি, তাই আমরা ২ দিক মিলিয়ে এমন একটি পয়েন্ট নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছি, যেই পয়েন্টটি, (-২) এর সবচেয়ে কাছে, আর খুব এ সাধারন (-২) এর কাছের পয়েন্টে ফাংশনের একটি মান ই থাকবে (ফাংশন এর ধর্ম) আর তাত্ত্বিকভাবে আমরা চিন্তা করি, আমরা চাচ্ছি, (-২) এর জন্য f(x) এর  একটি মান বের করতে, এখন মান আমরা কিভাবে পেতে পারি ?

আমরা এখন যেটা বুঝতে চাই, limiting value এর গুরুত্ব কী, limiting value দিয়ে আমরা আসলে কী ধারণা পাই? আমরা, বাংলাতে  অনেক সময়, (প্রায়) বা ইংরেজি তে  approximately, এই, ২ টা টার্ম‌ ব্যবহার করি, এটি দিয়ে আমরা বুঝাতে চাই, আসন্ন মান বা rounding value, যেটি দিয়ে আমরা চিন্তা করি কাছাকাছি কোন মানে আসলে আমরা যে মান বের করেছি ,সেটার জন্য মানের তেমন একটা হেরফের হবে না। আমাদের লিমিটিং ভ্যালুও  অনেকটা একই কাজ করে । এটির মাধ্যমে ও আমরা ধারণা করে নিই, আমরা যেই পয়েন্ট এর  কাছাকাছি x এর মান ধরছি ( কত কাছে? আমরা  এত কাছে যাওয়ার চেষ্টা  করছি যে আমরা বলতে পারবো x এর মান প্রায় ঐ মানের সমান, কিন্তু সমান না) ওই মানের জন্য ফাংশনটির মান কোন নির্দিষ্ট মানের দিকে পৌছায়? আর তখন বাংলায় আমরা বুঝি, আমরা  x  এর মান ঐ পয়েন্ট-এর যত কাছে পৌঁছাবে, ফাংশনটির মান ও আমাদের প্রাপ্ত মানের তত কাছে যাবে । আর যেহেতু আমরা + আর – উভয় দিক থেকেই, ঐ পয়েন্ট এর কাছে আসতে পারি, তাই, আমরা, x  এর জন্য  f(x)  এর মান ২ ভাবে বের করতে পারি, আর এটিকে limit এর ভাষায় লেখা যায়, limiting value of f(x) as x tend to (a+) [ x এর মান a এর কিছু বড় দিক থেকে a এর যত কাছে আসতে পারে] আর  limiting value of f(x) as x tends to (a-) [ একই ভাবে a এর কিছুটা কম মান থেকে x এর জন্য a  এর যত কাছে আসা যায় ] ।

তাহলে, আমরা বুঝতে পারলাম কোন পয়েন্ট এর জন্য limiting value দুইভাবে কাউন্ট  করতে হয়।  + আর – দিক থেকে আর আমরা চাচ্ছি, x=a এর সবচেয়ে কাছের কোন বিন্দুর জন্য f(x) এর মান বের করতে।

 

ফাংশনের ধর্ম অনুযায়ী, একটা বিন্দুর জন্য ফাংশনের কেবল একটি মান-ই থাকবে, আমরা লিমিটিং ভ্যালু পাওয়ার জন্য a এর কাছে আসার চেষ্ট করছি! [ ব্যাপারটা হচ্ছে,কাছে আসতে হবে,কিন্তু লেগে যাওয়া যাবেনা! কিছুটা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কারণ লেগে গেলেই বিপদ। ] ,তাহলে সেই অনুযায়ী, তাত্ত্বিকভাবে a এর সবচেয়ে কাছে একটি পয়েন্ট-ই পাওয়া যাবে আর যেহেতু একটা পয়েন্ট এর জন্য ফাংশন এর যেহেতু কেবল ১ টা মানই থাকতে পারে,তাই  কোন পয়েন্ট এর  ”প্রায়” বা tends to value a+/ a-  এর জন্য এই লিমিটিং ভ্যালুকে দুইপাস থেকেই সমান হতে হয়।

[ কঠিন লাগছে? 🙁 , তাহলে এটা চিন্তা করি। আমরা চাচ্ছি, x এর কাছাকাছি a এর মানের জন্য f(x) এর মান বের  করতে, কোন মান? যত কাছে পৌছালে ফাংশন এর মান ১ টি নির্দিষ্ট মানের কাছে পৌছে যায়, আর যদি ২ পাশ থেকে এই নির্দিষ্ট মান ২ রকম হয়, তাহলে কী ঐ পয়েন্ট এর জন্য আমরা  বলতে পারব a এর  যত কাছে যাচ্ছি, f(x)  এর একটি নির্দিষ্ট মানের দিকে পৌঁছাতে পেরেছি? নিশ্চয়ই না 😀 তাহলে তখন কীভাবে আমরা বলব যে ”প্রায়  a এর সমান” মানের জন্য f(x) এর কোন প্রায় বা লিমিটং মান আছে?]

এবার আরেকটি উদাহারণঃ

১.lim(x^2 – 9)/(x – 3)  as [x tend to 3]

সবচেয়ে ভাল হয় এটি গ্রাফ দিয়ে করলে। কিন্তু গ্রাফ ছাড়াও করা যায়! একটু চেষ্টা করে দেখি। আমরা  এখানে সরাসরি,  x = 3  বসিয়ে বলতাম যে x যখন প্রায় 3 তখন f(x)-এর মান হয়… উপস! আমরা দেখতে পাচ্ছি এখানে ৩ বসালে f(x) undefined, তাহলে ৩ বসানো যাবে না, এজন্য আমাদের আগে একে ৩ এর জন্য defined অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে, তাহলে আমরা এটিকে লিখতে পারি,

x2 – 32 = (x+3)(x -3)

 f(x) = ((x+3)(x-3))/(x-3) = x+3

এখানে আমরা  যদি 3 বসাই তাহলে f(x) = 6, means , when x tends to 3, f(x) tends to 6; কিছু জিনিস খেয়াল করার মত :

১. লিমিটং মান f(x) for x tends to a and value of f(x) as x = a সমান না বা এক জিনিসও না, কারন প্রথমটা তে x এর মান a এর কাছাকাছি আর দ্বিতীয়টা তে x এর মানই a.

আমাদের উদাহরণে 3 এর জন্য f(x) undefined, কিন্তু 3 এর কাছাকাছি মানের জন্য এর মান 6.  অর্থাৎ ডোমেন যদি হয় 3, তাহলে আমরা ফাংশন এর কোনো মান পাব না। কিন্ত 3 এর  যত কাছে পৌঁছাতে পারবো, ফাংশন এর মান 6 এর তত কাছে পৌছিয়ে যাবে । আমরা যদিও হিসাব এর জন্য 3 বসিয়ে দিয়েছি। কিন্ত আমরা এখানে বুঝাতে চেয়েছি যখন 3 এর প্রায় সমান তখন ফাংশন এর মান এতো। যদিও অনেকেই ভাবছে প্রথমে বসালে undefined, পরে বসালে defined এটা কীভাবে সম্ভব? 😀 গণিতের মজাই এখানে গণিত কে আমরা বিভিন্ন condition দিয়ে feel করতে পারি, যেমন দেখুন, আমরা, (x – 3) লবে হরে কেটে  দিয়েছি, কেন? যদি  x = 3 হয় তাহলে তো ০ কে ০ দিয়ে কাটলাম , এটি তো possible না, তাহলে?

বুঝা যাছে, আমরা শুরু থেকেই x->3 ধরেছি, যাতে ০ / ০ না, হয় আর আমরা বাদ দিতে পারি 😀 , আসলে আমরা একদম প্রথমেই 3 এর কাছাকাছি মান নিয়ে কাজ করতে পারতাম কিন্ত এতে আমদের এতো সুন্দর মান না এসে 6 এর কাছাকাছি কোন মান আসতো আর তাকেই ”প্রায়” ধরলেও ৬ এ আসত, আর তাই সুন্দর গাণিতিক হিসাবের জন্য আমরা ১ টি defined position এ নিয়ে এসেছি ৩ এর জন্য আর তারপর প্রায় ৩ বসিয়ে প্রায় মান বের করেছি 😀

তো আমরা ক্যালকুলাস এর মৌলিক ভিত্তি লিমিট বা সীমান্তিক মান  সম্পর্কে জানলাম। এই সীমার উপর ভিত্তি করেই ছোট ছোট মান নিয়ে ক্যালকুলাস কাজ করে, যেটা সম্পর্কে আমরা আশা করি পরের দিন জানবো। ততদিন ভাল থাকবে, আরও বেশি গণিতকে ভালবাসবে! আর আজকে আমরা যে জিনিস শিখলাম তা নিয়ে আরও চিন্তা করতে হবে তোমাদের। দুঃখিত,চিন্তার খোঁড়াক দিয়ে যাইনি। তবে নিজেরা চেষ্টা করে নিজেদের জন্য কিছু খোঁড়াক বের করে ফেলো! এতে তোমার ধারণা যেমন পরিষ্কার হবে , ঠিক তেমনি তুমি আরো বেশি জিনিস শিখতে পারবে । আর আমরা তো জানিই,এই চিন্তা থেকেই নতুনের শুরু!