CRISPR-Cas (উচ্চারণ : ক্রিস্পার-ক্যাস) বর্তমান সময়ের বহুল চর্বিত এবং চর্চিত বিষয়গুলোর একটা। হালের খবরাখবর রাখেন এমন খুব কম মানুষই আছেন এটার কথা যাদের কানে আসে নি। স্বশিক্ষার আজকের এই গল্প আবর্তিত হতে যাচ্ছে CRISPR-Cas কে খুব সহজে সকলের নিকট বোধগম্য করে তোলার জন্য এবং জিনপ্রকৌশলে মানুষের বিস্ময়কর অগ্রগতির একটা স্বচ্ছ চিত্র উপস্থাপনের প্রয়াসে। শুরু করা যাক তবে।

সবকিছুর গোড়ায় Gene

আমরা সবাই কোষ চিনি, যেটা নাকি জীবের গঠন ও কার্যগত একক (ক্লাস সিক্স থেকে এই সংজ্ঞাটা পরীক্ষায় কত মার্কস পাওয়াল!!)। কোষের নিউক্লিয়াস ধারণ করে ক্রোমোজম যার ভেতর আবার থাকে ডিএনএ। ডিএনএ হল এক বৃহদাকার পলিমার, যার কিছু কিছু অংশকে আমরা জিন (Gene) নাম দিই। যারা জেনেটিক্স পড়েছেন তারা মাত্রই জানেন জিন জিনিসটা ব্যাপক ক্ষমতাধর, ক্রোমোজোমের মোড়কে ডিএনএসর্বস্ব জিনগুলো সঞ্চারিত হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। পূর্বসূরীদের কাছ থেকে পাওয়া এই জিনগুলোই নির্ধারণ করে  দেয় আমরা কে কেমন হব। কে কত লম্বা হবে, কার চুলের রঙ কেমন হবে, কে ছেলে হবে বা কে মেয়ে হবে এসব উদাহরণ তো কতই শোনা যায়। শুধু কি তাই? কারো মাথায় টাক পড়বে কি পড়বে না, কোন খাবার কার কীভাবে হজম হবে বা আদৌ হবে কি না এমন সব ব্যাপার – প্রত্যেকটা খুঁটিনাটি নিয়ন্ত্রণ করে জিন। সকল জিন আর জিন না থাকা অংশ – পুরোটা মিলে তৈরি করে আমাদের জিনোম।

স্বাভাবিক কর্মক্ষম যে জিন, তাতে কোনো রকম পরিবর্তন (Mutation)  আসলে তা তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে বসতে পারে, ফলশ্রুতিতে পোহাতে হয় নানা রকম ঝামেলা। বর্ণান্ধতা, হিমোফিলিয়া (রক্ততঞ্চনের অপারগতা), মাসকুলার ডিসট্রফি (দুর্বল, অসার পেশি) থেকে শুরু করে এমনকি ক্যান্সার – মানুষের হাজার হাজার রোগ হতে পারে এরকম জিনগত সমস্যা থাকার কারণে। নিত্যদিন এহেন নতুন নতুন রোগ আবিষ্কৃত হচ্ছে বলে এদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত  বাড়ছেই। তবে তুলনামূলক দুষ্প্রাপ্য হওয়ায় আর রোগ শনাক্ত করবার অসামর্থ্যের দরুণ আমরা তেমন একটা শুনতেও পাই না এই বিতিকিচ্ছিরি রোগদের নাম।

এই যে এইডসের প্রতিকার খুঁজতে পৃথিবীতে তোলপাড়, তার জন্য দায়ী এইচআইভিও কিন্তু আমাদের ডিএনএ তে বছরের পর বছর লুকিয়ে থাকে। আক্রমণ করেই এই ভাইরাস শরীরের ক্ষতি করতে শুরু করে না। বরং তার কাছ থেকে আসা এক টুকরো ডিএনএ আমাদের জিনোমের অংশ হয়ে থাকে অনেকটা সময় ধরে। হঠাত করেই এই ডিএনএটুকু সক্রিয় হয়ে উঠলে তা থেকে নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হতে থাকে আর এইডসের লক্ষণ দেখাতে থাকে আক্রান্ত মানুষ।

মোদ্দা কথা হল – আপনার ডিএনএ ঠিকঠাক যেভাবে থাকার কথা তেমন থাকলে আপনি ঠিক, না ঠিক থাকলে সর্বনাশ যা হবার সেটাও একান্তই আপনার (থুক্কু, সাথে আপনার সন্তান-সন্ততিরও)।

তাহলে এমন কি কিছু আছে যা পারবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত জিনদের সুস্থ করে তুলতে? অথবা পারবে কি অযাচিত কোনো জিনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে?

তো এই CRISPR জিনিসটা কী? খায় না মাথায় দেয়?

CRISPR-Cas আমাদের সেই আরাধ্য জিনোম এডিটিং সিস্টেম যা ব্যবহার করে যেকোনো জীবের জিনোমে পরিবর্তন আনা সম্ভব। আমরা চাইলে জিনোম থেকে ডিএনএ এর কিছু অংশ কেটে বাদ দিতে পারি, আবার নতুন কিছু বাড়তি যোগও করতে পারি। ডিএনএ কে এভাবে সম্পাদনা করা যায় বলেই ক্রিস্পার-ক্যাস এক শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, গবেষকরা নানা উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে চলেছেন এটাকে।

এতদিন কোথায় ছিলে?

CRISPR-Cas সম্পর্কে মানুষ সঠিকভাবে অবগত হয় ২০০৪ সালের পরে যদিও গত শতাব্দীর আশির দশক থেকেই বিজ্ঞানীদের চোখে পড়ছিল আদিকোষীদের মাঝে CRISPR এর প্রাচুর্য। প্রথমেই বলে রাখা ভাল, এই সিস্টেমটা কিন্তু মানবদেহের নিজস্ব নয়, বরং তা ব্যাক্টেরিয়া থেকে চুরি করা। চুরি? হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। আমাদের যা নয় সেটাকে অন্যজায়গা থেকে এনে ব্যবহার করাকে চুরি বলা গেলেও এটা একটা ভাল চুরিই বটে।

CRISPR হল ব্যাক্টেরিয়া জিনোমের একটা অঞ্চল। CRISPR কে ভেঙ্গে লিখলে পাওয়া যায় Clustered Regularly Interspaced Short Palindromic Repeats। নাভিশ্বাস ওঠানো এই গালভরা নামের পেছনের গল্প কেমন? বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরে খেয়াল করেছিলেন ব্যাক্টেরিয়াদের জিনোমে এমন এক অংশ আছে যেখানে কিছু সিকুয়েন্সের পুনরাবৃত্তি (Repeat) ঘটে। সিকুয়েন্সগুলো প্যালিনড্রমিক (Palindromic) যার অর্থ ডিএনএ এর একটি সূত্রকে (Strand) সিকুয়েন্স ATCGAT হলে তার অন্য সূত্রকে থাকে TAGCTA – দুই স্ট্র্যান্ডের এই দুই সিকুয়েন্স একটা আরেকটার ঠিক উল্টো। CRISPR অঞ্চলে কিছুদূর পরপরই খুঁজে পাওয়া যায় এই প্যালিনড্রমিক রিপিট। রিপিটগুলো থাকে গুচ্ছাকারে (Clustered) যার অর্থ রিপিটগুলো পাশাপাশি সংঘবদ্ধ অবস্থায় থাকে। তবে রিপিটগুলোর মাঝে কিছু স্পেসার (Spacer) সিকুয়েন্স থাকে, মানে দু’টো ATGGAT এর মাঝে ভিন্নরকম কোনো একটা সিকুয়েন্স যেমন GGCTT থাকতে পারে। CRISPR নামকরণে আসলে রিপিটগুলো প্রাধ্যান্য পেলেও আসল খেলা কিন্তু স্পেসার সিকুয়েন্সের। এই স্পেসারগুলো পুরনো ইনফেকশনের স্মৃতি বহন করে।

মানে? পুরনো ইনফেকশন? তার আবার স্মৃতি??

ক্রিস্পারে প্যালিনড্রমিক রিপিট আর স্পেসারের সহাবস্থান

আমি চিনি গো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী

ব্যাক্টেরিয়ার সুখের সংসারে আগন্তুক ভাইরাসের হানা কোনো নতুন খবর নয় নিশ্চয়ই। কোনো রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু, হোক সে ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া, আমাদের আক্রমণ করলে আমাদের শরীর প্রথমে বেশ ভোগে। কিন্তু এরপর সেই একই বান্দা আবার আক্রমণ করলে বেশি সুবিধা করতে পারে না। কারণ আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার একটা বিশেষ ক্ষমতা হল স্মৃতি তৈরি করে রাখা, যাতে পরবর্তীতে ঐ জীবাণুর আক্রমণে খুব সহজেই তাকে চেনা যায় ও উপর্যুপরি ধ্বংস করা যায়।

ব্যাক্টেরিয়াও কম চতুর নয়। মানুষ না হলে কী হবে, ভাইরাসের কারণে ব্যাক্টেরিয়া বেচারারাও অসুখে পড়তে পারে এবং মারাও যায়। ভাইরাসদের এবার শিক্ষা দিতে তাই ব্যাক্টেরিয়া আগে নিজে শিক্ষা গ্রহণ করল।

কীরকম?

আক্রমণকারী ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটানোর পূর্বশর্তই হল ভাইরাল ডিএনএ কোষের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। কারণ কোষের বাইরে ভাইরাস নিঃসার, কোষমধ্যস্থ হতেই সে সজীব। ব্যাক্টেরিয়া তাই করল এক বুদ্ধি, অচেনা ভাইরাসের সংক্রমণ হতেই তারা ভাইরাসের ডিএনএটাকে দেয় কেটে। তাতে আর বিপদের আশংকা থাকে না। তবে এখানেই কাজ শেষ না করে ব্যাক্টেরিয়া শিক্ষাগ্রহণ করে পরবর্তীতেও হানাদার ভাইরাসদের মজা বোঝাতে। কেটে ফেলা সেই ডিএনএর কিছু অংশ তারা সযত্নে ঢুকিয়ে রাখে তাদের ক্রিস্পার অঞ্চলে। এই ডিএনএ তখন হয়ে যায় স্ক্রিস্পারের দু’টো রিপিটের মাঝের স্পেসার। এই স্পেসারই এখন তাহলে স্মৃতি হয়ে রইল ভাইরাল ইনফেকশনের, বোঝা গেছে ব্যাপারটা?

ভাইরাল ডিএনএ কাটা আর তা ক্রিস্পারে অংশ জুড়ে দেবার কাজটা করতে যে প্রোটিন লাগে তারা হলে Cas1 আর Cas2, Cas এসেছে CRISPR Associated Protein কথাটা থেকে। এই প্রোটিনগুলো তৈরি হবার জন্যও তো কিছু জিন দরকার (cas genes), যেগুলো ব্যাক্টেরিয়ার ক্রোমোজোমে ক্রিস্পার অংশের পাশেই থাকে।

ক্রিস্পার অঞ্চলে ভাইরাল ডিএনএ বা নতুন স্পেসারের অন্তর্ভুক্তি। ক্রিস্পার অঞ্চলে বাদামী জায়গাগুলো রিপিট আর মাঝের অন্য রঙের সিকুয়েন্সগুলো স্পেসার।

এতক্ষণ না হয় সবই বুঝলাম। পরেরবার সংক্রমণ হলে এই স্মৃতি ব্যবহার হবে কী করে?

এটার উত্তরও খুব সহজ। কল্পনা করা যাক একটা থানার কথা। থানায় সকল অপরাধীর তথ্য মজুদ আছে। এখন টহল দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব পড়ল অপরাধীদের খুঁজতে থাকা আর পাওয়ামাত্র তাদের হাতে থাকা তথ্য মিলিয়ে পাকড়াও করা। CRISPR আমাদের সেই থানা। এখানে যে তথ্য আছে ডিএনএ সিকুয়েন্স আকারে তা একদম মেইন ডকুমেন্ট, এটা সরাসরি টহলের কাজে ব্যবহার করা যায় না। তাহলে উপায়? উপায় হল ঐ ভাইরাল ডিএনএ থেকে অনুরূপ আরএনএ তৈরি করা যার নাম দেওয়া যায় CRISPR RNA বা সংক্ষেপে Cr-RNA. cas জিন থেকেই তৈরি হওয়া Cas9 প্রোটিন আমাদের পুলিশ যারা এই Cr-RNA সহযোগে টহল দিতে থাকে। নব্য আক্রমণকারী ভাইরাস তার ডিএনএ কোষের ভেতর প্রবেশ করানোমাত্রই Cas9 Cr-RNA এর সাথে মিলিয়ে নেয় ঐ ডিএনএকে এবং মিল পেলেই ডিএনএটাকে কেটে ফেলে। ব্যস, কেল্লা ফতে!

 

 

নতুন আক্রমণকারী ভাইরাস ডিএনএকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে

এই ক্রিস্পার লইয়া আমরা কী করিব?

বিজ্ঞানীরা ব্যাক্টেরিয়ার Cas9 প্রোটিনটাকে অন্যান্য কোষে ব্যবহার করতে চাইলেন এটা দেখতে যে আমাদের ইচ্ছামত কোনো ডিএনএ সিকুয়েন্সকে এই প্রোটিনটা দিয়ে এডিট করানো যায় কিনা। এটাকে বলে টার্গেটেড জিনোম এডিটিং (Targeted genome editing)। Cas9  ডিএনএ এর কসাই হিসেবে তো খুবই ভাল, কিন্তু সে তো রেফারেন্স (যেমন – Cr-RNA) ছাড়া কাজ করে না। Cas9 এর সাথে তাই জুড়ে দেওয়া হল ল্যাবরেটরিতে বানানো কৃত্রিম RNA যাকে আমরা Guide RNA বলি। গাইড বা সহায়ক RNA এর সিকুয়েন্স অবশ্যই উদ্দিষ্ট জিনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে যেন যেখানে চাওয়া হচ্ছে সেখানেই Cas9 কাজ করে। এমন RNA সংশ্লেষণ করা খুব কঠিন কোনো কাজ নয় যদি আমরা আগে থেকে ঐ জিনের ডিএনএ সিকুয়েন্সটা জানি। টার্গেটে যেয়ে আঘাত হানতে পারার ক্ষমতাধর এই Cas9-Guide RNA জুটি যেন মিসাইলেরই শামিল!

গাইড আরএনএ সহযোগে যেই না Cas9 জিনটাকে কেটেছে অমনি দেখা যায় কোষ ঐ ক্ষতিগ্রস্ত অংশটা মেরামত করতে সচেষ্ট হয়। তবে মেরামত প্রক্রিয়াটা বেশ ঝামেলাপূর্ণ এবং তাতে ভুল করার সম্ভাবনা খুবই বেশি। এই ত্রুটিপূর্ণ সংস্কারকাজে কাটা জায়গাটা ঠিক করে ফেলা গেলেও সেখানে সিকুয়েন্সে অদলবদল হয়ে যেতে পারে। যার ফলে জিনটা আর কাজের থাকে না।

এই প্রক্রিয়াতে ইতমধ্যে বিভিন্ন নক আউট প্রাণী বানানো সম্ভবপর হয়েছে যা গবেষণায় খুব কাজে লাগে। যেমন নক আউট ইঁদুর হল এমন ইঁদুর যার একটা জিনকে আমরা নক আউট বা বাতিল করে দিয়েছি। এসব নক আউট প্রাণী ব্যবহার করে কোন জিন থাকলে কী হয়, না থাকলেই বা কী হয় অর্থাৎ সর্বোপরি জিনের কাজ বোঝা সম্ভব হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়। Cas9 দিয়ে কেটে ফেলার পর আমরা একটা কাজের ডিএনএ সিকুয়েন্সও ঢুকিয়ে দিতে পারি কোনো জিনে। এভাবে কোনো জিনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের জায়গায় প্রকৃত সিকুয়েন্স প্রবেশ করিয়ে জিনটাকে আবার সুস্থ করে ফেলা যায়। এমনটা করা গেলে যত জিনগত রোগ (Genetic disease) আছে তাদের অচিরেই নির্মূল করা যাবে।

গবেষকরা ইতোমধ্যে এইচআইভি আক্রান্ত কোষে ভাইরাসের সুপ্ত ডিএনএকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ক্যান্সার কোষকেও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক কোষে রুপান্তর করা গেছে বলেও দাবী আছে।

বেলাশেষের গান

ক্রিস্পার-ক্যাস প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে আমাদের সামনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সাদামাটা অথচ শক্তিশালী এই জিনোম এডিটিং সিস্টেমের ক্ষমতা দেখে মানুষ প্রতিনিয়ত অবাক হচ্ছে এবং নতুন নতুন ক্ষেত্রে এটার ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর। তবে সবকিছুকে যতটা সহজ বলে আমরা মনে করছি এটা আদতে এতটাও সহজ নয়। একটা লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রকৃতভাবে কী কী করতে হয় সেটা আমাদের অজানা। যেমন, মানুষ চেষ্টা চালাচ্ছে জিনোম এডিট করে শূকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এমন করে তুলতে যাতে সেটা মানুষে স্থানান্তর করা সম্ভব হয় (Organ transplantation). কেন শূকরের অঙ্গ শূকরের মত আর মানুষেরটা মানুষের মত তার উত্তর নিশ্চয়ই একটা কি দু’টো জিনের মধ্যে লুকিয়ে নেই যে তাদের সম্পাদনা করলেই আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।

তাছাড়া এই সিস্টেমে কেবল কাঙ্খিত জিনে পরিবর্তন আনতে চাইলেও তা অন্য জায়গাতেও অযাচিত পরিবর্তন/মিউটেশন ঘটিয়ে বসতে পারে। বিভিন্ন প্রজাতিতে কিংবা শরীরের বাইরে কালচার করা মানবকোষে ক্রিস্পার-ক্যাস তাই সাফল্যের সাথে ব্যবহার করা গেলেও পূর্ণাঙ্গ মানুষে কিংবা ভ্রূণাবস্থায় এর ব্যবহার তাই অনিশ্চিতই হয়ে আছে।

ক্রিস্পার-ক্যাস এর পেটেন্ট নিয়ে কুৎসিত বিরোধ আছে Broad Institute আর University of California, Berkeley এর মধ্যে। ক্রিস্পার দ্বারা জিনোম সম্পাদনা সহজ হলেও তাই বলা যায়, এটা খুব দ্রুতই সহজলভ্য হতে যাচ্ছে না যাতে মানবজাতির ইতিহাস বদলে দেবার মত কোনো গল্প এখনই লিখে ফেলা যায়।