যেহেতু এ পর্বের নাম “শুরুর কথা” কাজেই কিছু প্রাথমিক কথা-বার্তা সেরে ফেলা দরকার! যাই হোক, অনেকেই হয়তো নড়ে-চড়ে বসেছো যে কি এমন জরুরি কথা বলা দরকার! ব্যাপারটা মোটেও গুরুতর কিছু না। শুধুমাত্র কিছু ছোটোখাটো বিষয় যা তোমার না জানলেও চলে কিন্তু জানলে পড়ার মজা বেড়ে যাবে অনেকখানি!

তোমাদের জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বইয়ের একদম প্রথম চ্যাপ্টারটা দেখেই অনেকের জীববিজ্ঞানের প্রতি বিতৃষ্ণা কাজ করা শুরু করে। কারণ সনাতনী উপায়ে চ্যাপ্টারটা আমাদের মুখস্থ করানো হয়। কিছু অদ্ভূত অদ্ভূত নামের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলা হয়, এই পর্বের বৈশিষ্ট্য এই, ওই পর্বের বৈশিষ্ট্য সেই! তারপর এই পর্বের প্রাণির নাম এটা, ওই পর্বের প্রাণির নাম ওটা- এরকম আরো কতো কিছু! ফলে স্বভাবতই তোমাদের মনে ধারণা জন্মে যায়, জীববিজ্ঞান হয়তো এভাবেই খাবার গিলে ফেলার মতো গিলে ফেলতে হয়। অনেকের মনে হয় এখানে চিন্তার কোনো সুযোগ নেই, মাথা খাটানোর কোনো জায়গা নেই, ফিজিক্স-কেমিস্ট্রির মতো কোনো কিছুকে Intuit করা যায় না! কিন্তু এ চ্যাপ্টার নিয়ে লেখার অন্যতম একটা উদ্দেশ্য হলো এ নিয়ে তোমাদের সবার প্রচলিত ধারণা ভাঙ্গানো এবং অবশ্যই যতোটা সম্ভব মজা এবং উদাহরণ দিয়ে চ্যাপ্টারটাকে বোঝার চেষ্টা করা! বিশ্বাস করো আর না- ই করো এটাই কিন্তু তোমাদের জীববিজ্ঞান বইয়ের সবচেয়ে Modern আর Conceptual চ্যাপ্টার!

কি বলেন এইসব!

প্রত্যেক বিষয়েরই কিছু নির্দিষ্ট সূত্র আছে যার নাম করলে ওইসব বিষয়ের কথা মনে পড়ে যায়। যেমন Theory of Relativity, Newton’s Law of Gravity বললে তুমিই বলো কার বা কাদের কথা মনে পড়ে! আবার যদি বলি Avogadro’s Number, Conservation Law of Energy, Dalton’s atomic concept এসব বললে রসায়ন নামের এক রস-কষহীন বিষয়ের কথা মনে হয় না?(রসায়ন যদিও মোটেও রস-কষহীন কোনো বিষয় না, তাতে রসালো জিনিসপত্র আছে প্রচুর পরিমাণে!)। ঠিক তেমন জীববিজ্ঞানের খুব বিতর্কিত আর খুব প্রাথমিক আর খুব আধুনিক একটা কনসেপ্ট হচ্ছে “বিবর্তনবাদ”(Evolution). তোমাদের হয়তো মনে হতে পারে- এই রে, বিবর্তনবাদ জিনিসটা তো উলটাপালটা কথা বলে! এটা নাকি বলে মানুষ বানর থেকে এসেছে- আমরা নাকি বানর- হ্যানো ত্যানো! ব্যাপারটা মোটেও সেরকম কিছু বলে না। তবে তা নিয়ে নানা কারণে নানা রকমের বিতর্ক আছে! তাই আমরা চেষ্টা করবো খুব সাবধানে এর বিতর্কিত অংশগুলো থেকে দূরে থেকে পুরো জিনিসটাকে Academically approach করে আমাদের কাজটা সেরে নিতে।

তো এখন কি করবো!

তোমাদের হয়তো মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, জিনিসটা যদি এতোই বিতর্কিত হবে তাহলে কেন আমরা এটি নিয়ে আগাচ্ছি! সত্যি কথা বলতে কি, এ চ্যাপ্টারটা এমনভাবেই সাজানো হয়েছে যেন তুমি প্রাণিজগৎ বোঝার জন্য বিবর্তনবাদের সাহায্য নিতে পারো! চ্যাপ্টারটার Design টাই এরকম। আর সবাই এ জিনিসটাই বোঝে না বলে সবার এটা “মুখস্থ” করতে হয় এবং জীববিজ্ঞানের প্রতি বিতৃষ্ণা লাগা শুরু করে!
কাজেই দেখতেই পাচ্ছো, এটা একই সাথে তোমার বইয়ের সবচেয়ে কনসেপচুয়াল, আধুনিক একটা চ্যাপ্টার যাকে তোমরা আগে খালি মনে করতে বিদঘুটে নামের অবাধ্য চ্যাপ্টার। তো চলো, শুরু করি! শুভ কাজে আর দেরি ক্যানো!

ভালো কথা, চ্যাপ্টারের শুরুতেই এই সিরিজ লেখায় যাদের যাদের সাহায্য নিতে হয়েছে তাদের একটা ছোটোখাটো লিস্ট দিয়ে দিই।
১। Khan Academy
২। Hank Green
৩। 10 Minute School
৪। Crash Course