অল্প কয়েকদিন পরই পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি, চারিদিকে সাজসাজ রব। পহেলা বৈশাখ হল বাংলা নববর্ষ। নতুন একটি বছর শুরু হতে যাচ্ছে এদিন – ১৪২৩। কিন্তু কী এই ১৪২৩? কেনোই বা আমরা এর জন্মদিন পালন করছি পহেলা বৈশাখে? এ দু’টি প্রশ্নের উত্তর নিয়েই বর্ষপঞ্জির নাড়ি-নক্ষত্র নিয়ে এ সিরিজ।
বর্ষপঞ্জির ধারণা বেশ পুরনো। সভ্যতার শুরু থেকেই বিভিন্ন কারণে প্রয়োজন হয়েছিল এর। কোনো একটি ফসল ঘরে তোলার আর কয়দিন বাকি, কিংবা কয়দিন পর বন্যা হতে পারে – এসব প্রশ্নের একটি উত্তর লুকিয়ে ছিল বর্ষপঞ্জিতে। কিংবা কোনো একটি ঘটনা ঠিক কতদিন আগে হয়েছিল, তার উত্তর জানতেও ভরসা এই বর্ষপঞ্জিই।
আমরা আমাদের শৈশব থেকে এই বর্ষপঞ্জি দেখে এতটাই অভ্যস্ত যে আমরা এটি কোথা থেকে এল তা নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাই না। এর কথা জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে কয়েক হাজার বছর আগের দিনে। আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবন পরিচালিত হত কয়েকটি চক্রে – রাত আর দিনের চক্র, কিংবা পূর্ণিমা এবং অমাবস্যা, অথবা ঋতুসমূহের ক্রমাগমন। এই তিনটি চক্রের সাথে জড়িত তিনটি বস্তু – পৃথিবী, চাঁদ এবং সূর্য। পৃথিবীর ঘূর্ণনে হয় দিন এবং রাত। সূর্যের কারণে হয় ঋতু পরিবর্তন। এবং চাঁদের কারণে পূর্ণিমা এবং অমাবস্যা। একইভাবে বর্ষপঞ্জির ইতিহাসও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই তিনটি জিনিষের সাথে। বর্ষপঞ্জির তিনটি মূল উপাদান হল – দিন, মাস এবং বছর। দিনের হিসেব করে দেয় পৃথিবী, মাসের হিসেব করে দেয় চাঁদ এবং বছরের হিসেব করে দেয় সূর্য! তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, বছর কিংবা চন্দমাস – কোনোটিরই নির্দিষ্ট পরিমাণ দিন নেই, কিংবা বছরের মধ্যেও নির্দিষ্ট পরিমাণ মাস নেই।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রীষ্মমন্ডলে ঋতুচক্রকে মোটামুটি এভাবে ভাগ করে নিয়েছেন – বসন্ত – গ্রীষ্ম – শরত – শীত – বসন্ত। এবং একটি চক্রের স্থায়িত্বও বেশ সাফল্যের সাথেই তারা মেপে নিয়েছেন – 365.2421896698 দিন। তবে মজার ব্যাপার হল ধীরে ধীরে এই স্থায়ীত্ব ছোট হয়ে আসছে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, প্রতি শতাব্দীতে এর পরিমাণ কমছে মাত্র এক সেকেন্ড হারে।
অন্যদিকে চান্দ্রমাস হিসেব করা হয়ে থাকে চাঁদের গতি অনুসারে – New Moon – First Quarter – Full Moon – Last Quarter – New Moon. বাংলায় বললে অমাবস্যা – শুক্লপক্ষ – পূর্ণিমা – কৃষ্ণপক্ষ – অমাবস্যা । চাঁদের এই চক্রের স্থায়িত্বও হিসেব করা – 29.5305888531। এবং সূর্যের মত এর স্থায়ীত্বও ধীরে ধীরে কমছে – প্রতি শতাব্দিতে প্রায় .2 সেকেন্ড হারে।
তার মানে গ্রীষ্মমন্ডলে এক বছরে চান্দ্রমাস আছে 365.2421896698/29.5305888531 =12.3682663927 টি।
যদি প্রতি সৌর বছরে ৩৬৫ দিন থাকতো এবং প্রতি সৌর বছরে ১২ টি মাস ঠিক মত আটানো যেত, তাহলে আর কোনো সমস্যাই ছিল না। গোল বাধালো এই ভগ্নাংশগুলোই। বর্ষপঞ্জির ইতিহাস জুড়ে আছে জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ধর্মপ্রচারক কিংবা গণিতবিদদের চেষ্টা – এই সৌর বছর এবং চান্দ্রমাসকে একসাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার।
বেশীরভাগ প্রাচীন বর্ষপঞ্জিই মূলত চান্দ্রমাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তবে ঋতুর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য কিছু ঘাটতি তাদের থেকে যেত। কারণ সৌর বছরের উপর ঋতুচক্র নির্ভর করে। আর ১২ টি চান্দ্র মাস একটি সৌর বছরের চেয়ে 10.87512343226 দিন ছোট। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নিয়ম ছিল, কোথাও কয়েক বছর শেষে নতুন একটি মাস জোড়া লাগিয়ে দেওয়া হত।
গ্রীক সভ্যতা
খ্রীষ্টপূর্ব ৪৩২ শতাব্দীতে গ্রীসের এথেন্সের মেটন দেখলেন যে ২৩৫ টি চান্দ্রমাস হল ঠিক ১৯ টি সৌর বছরের সমান (তবুও দুই ঘন্টার পার্থক্য থেকে যায়)। এ থেকে তিনি ১৯-বছরের একটি চক্র প্রস্তাব করলেন। ক্যালিপ্পাস পরবর্তীতে ৯৪০ টি চান্দ্র মাসকে ৭৬ টি সৌর বছরের সমান ধরলেন (প্রতিটি সৌর বছরে 365.25 দিন ধরে)। আরও পরে হিপ্যারচাস ৩০৪ সৌর বছরকে ৩৭৬০ টি চান্দ্র মাসের সমান ধরে নতুন আরেকটি চক্র প্রস্তাব করেন।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে মেটনের চক্রটিই পরবর্তীতে আবার তার গুরুত্ব ফিরে পায়। শুরুর দিকে খ্রীষ্টান গীর্জাগুলোতে এর ভিত্তিতে ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়।
প্রাচীন মিসর
ব্যাবিলনিয়ান, গ্রীক কিংবা রোমানদের চেয়ে মিসরীয়দের বর্ষপঞ্জি ছিল ভিন্ন। মিসর ছিল প্রাচীনতম কৃষিভিত্তিক সভ্যতাগুলোর একটি এবং তাদের পুরো সভ্যতা অনেকাংশেই নির্ভর করতো নীলনদের বাৎসরিক বন্যার উপর। এই বন্য মিসরে পানি এবং পলি এনে দিত। এভাবেই মিসরের জীবন নির্ভরশীল হয়ে পড়ে বন্যার উপর, যে বন্যা আবার নিয়ন্ত্রিত হত ঋতুচক্রের ধারা, অন্য কথায় সৌর বছরের দ্বারা। তাই মিসরের বর্ষপঞ্জিতে চাঁদের কোনো ভূমিকায় ছিল না।
তাদের ১২ টি মাস ছিল, প্রতি মাসে ছিল ৩০ টি দিন। এবং ৩৬৫ দিনের হিসেব মেলাতে তারা বছর শেষে পাঁচটি দিন যোগ করে নিত। এই পাঁচটি দিন তারা পালন করতো বিভিন্ন দেবতার নামে। তারা অধিবর্ষের ধারণা নিয়ে খুব বেশী মাথা ঘামায় নি। বরং তারা ধরেই নিয়েছিল বর্ষপঞ্জির মধ্যে ধীরে ধীরে ঋতুগুলো পিছিয়ে যেতে থাকবে। এই পিছিয়ে যাওয়ার চক্রটি ছিল ১৪৬০ বছর দীর্ঘ।
এই বর্ষপঞ্জির সাথে প্রাকৃতিক সৌর বছরের সম্পর্ক তারা ঠিক করতো Sirius এবং Dog-Star নামক দু’টি তারার Heliacal Rising দ্বারা। তবে প্রাকৃতিক সৌর বছরের সূচনা নির্ধারনের অধিকতর গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হল বিষুব ও নিরক্ষ রেখার ব্যবহার।
প্রাচীন সভ্যতাগুলোতে মাস কিংবা বছরের দৈর্ঘ্য নির্ভর করতো ধর্মপ্রচারক কিংবা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণের উপর। জুলিয়াস সিজারের যুগের পূর্ব পর্যন্ত এই মিসরীয় বর্ষপঞ্জিই ছিল একমাত্র সিভিল ক্যালেন্ডার, যেখানে মাস এবং বছরের দৈর্ঘ্য বিভিন্ন নিয়ম দিয়ে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। এই মিসরীয় বর্ষপঞ্জিকে তাই বলা যায় আমাদের বর্তমান বর্ষপঞ্জিগুলোর পথপ্রদর্শক।
রোমান বর্ষপঞ্জি
গ্রীকদের মত রোমের বর্ষপঞ্জিও ছিল চাঁদের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তারা কয়েক বছর পর পর নতুন একটি মাস যোগ করে নিত সৌর বছরের সাথে তাল মেলানোর জন্য। এদের বছরের ১২ টি মাস ছিল, মাস গুলোর নাম ছিলঃ Martius, Aprilis, Maia, Junius, Quintilis, Sextilis, September, October, November, December, Januarius and Februarius। Quintilis থেকে December পর্যন্ত নামগুলো এসেছে ল্যাটিন পাঁচ থেকে দশ থেকে। অর্থাৎ, রোমানরা বছর শুরু করতো মাস থেকে। Quintilis এবং Sextilis ছাড়া বাকি নামগুলো ২৫০০ বছর ধরে প্রায় অপরিবর্তীতভাবেই চলে এসেছে।
রোমানদের কাছে বিজোড় সংখ্যা ছিল ভাগ্যের প্রতীক, অপরদিকে জোড় সংখ্যা বোঝাতো দুর্ভাগ্য। তাই ফেব্রুয়ারী ছাড়া বাকি সব মাসেই তারা বিজোড় সংখ্যক দিন রেখেছিল। March, May, Quintilis এবং October-এ ছিল ৩১ দিন, February-তে ২৮ এবং বাকিগুলোতে ছিল 29 দিন। সব মিলিয়ে হয় ৩৫৫ দিন, যা প্রায় ১২ টি চান্দ্রমাসের সমান। এভাবে প্রতি বছর তারা সৌর বছর থেকে প্রায় ১০ দিন করে পেছাতে থাকতো। তাই কয়েক বছর পর একটি অতিরিক্ত (সঠিক শব্দ – Intercalary। এর কোনো বাংলা অর্থ পাইনি।) মাস তারা যোগ করে নিত। এই মাসটি যোগ করা হয় ফেব্রুয়ারির শেষে, এবং সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিকে ছোট করে ২৩ দিনের বানিয়ে দেওয়া হত।
প্রতি মাসে তিনটি বিশেষ দিন থাকতোঃ the Kalends, the Nones এবং the Ides। Kalends হল মাসের প্রথম দিন। এ শব্দটি থেকেই পরবর্তীতে ক্যালেন্ডার শব্দটি এসেছে। Nones হল মাসের পঞ্চম দিন। তবে ৩১ দিনের মাসগুলোর (March, May, Quintilis, October) ক্ষেত্রে এটি মাসের সপ্তম দিন। Ides হল মাসের ১৩ তম দিন। আবার ৩১ দিনের মাসগুলোর ক্ষেত্রে এটি হল পনেরতম দিন।
রোমানরা ১ মার্চ, ২ মার্চ, ৩ মার্চ এভাবে দিন হিসেব করতো না। বরং তারা এই তিনটি বিশেষ দিনের উপর ভিত্তি করে দিন গুনতো। যেমন Kalend-এর পরের দিনকে তারা ২ মার্চ বলতো না। এর নাম ছিল ante diem VI Nonas Martias, অর্থাৎ মার্চের Nones-এর ছয় (VI) দিন আগে। অর্থাৎ মার্চের চেহারা ছিল এরকমঃ
1st | Kalendis Martiis |
2nd | ante diem VI Nonas Martias |
3rd | ante diem V Nonas Martias |
4th | ante diem IV Nonas Martias |
5th | ante diem III Nonas Martias |
6th | pridie Nonas Martias |
7th | Nonis Martiis |
রোমানরা বিশ্বাস করতো যে, মাসের কিছু দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এসব দিনে তারা ব্যবসায়ীক চুক্তি, ধর্মীয় কাজ কিংবা যুদ্ধে যেত। Pontifex Maximus(The head of the principal college of priests)-এর নেতৃত্বে ধর্ম প্রচারকরাই ঠিক করে দিতেন একটি দিন গুরুত্বপূর্ণ কি না। কখন ইন্টারক্যালারি মাসের দরকার হবে, সেটিও ধর্ম প্রচারকরা ঠিক করে দিতেন। এভাবে তারা ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে জনগণের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবন অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রন করতেন। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা খুব বেশী মনোযোগী এক্ষেত্রে ছিলেন না। তাই জুলিয়াস সিজারের আমলে এসে দেখা গেল ক্যালেন্ডার ইতোমধ্যে তিন মাস পিছিয়ে গেছে। এটি সামলে নেওয়ার জন্য জুলিয়াস সিজার এক বছরেই তিনটি ইন্টারক্যালারি মাস যোগ করে নেন। এই বছরটি হল বর্তমান ক্যালেন্ডারের খ্রীষ্টপূর্ব ৪৬ অব্দ। এছাড়াও তিনি প্রতিটি মাসের দৈর্ঘ্য বদলে দিয়ে তাদের বর্তমান দৈর্ঘ্যগুলো দান করেন।
তবে সিজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজ ছিল চান্দ্রমাস সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে সৌর বছর শুরু করা, যার দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছিল 365.25 দিন। তিনিই চার বছর অন্তর অধিবর্ষের নিয়মটি শুরু করেছিলেন। এই দিনটি যোগ করা হত বছরের শেষে। তখন বছর শেষ হত ফেব্রুয়ারিতে। তাই এটি যোগ হত ফেব্রুয়ারির সাথেই।
তবে এক্ষেত্রেও গোল বাধে। দেখা গেল যে ধর্মপ্রচারকরা চার বছর অন্তর কাজটি না করে তিঙ বছর অন্তর কাজটি করে বসে আছেন। এবং এর ফলস্বরুপই খ্রীষ্টপূর্ব ৮ অব্দ তিন দিন দেরীতে শুরু হয়েছিল। পরবর্তিতে অগাস্টাস সিজার এটি সংশোধন করেন। তিনি ৮ খ্রীষ্টাব্দ (After Christ) পর্যন্ত অধিবর্ষ বন্ধ রাখেন। এবং এরপর থেকে কোনো পরিবরতন ছাড়াই জুলিয়ান ক্যালেন্ডার চলতে থাকে ১৫৮২ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত।
________________________________________________________________________
এরপর ক্যালেন্ডারের ভাগ্যে কী হল, সেসব নিয়ে বলবো পরের পর্বে। এখন আসি একটি ভুলে যাওয়া প্রসঙ্গে। আমরা দিন, মাস, বছর নিয়ে কথা বলতে বলতে week-এর কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছি। বস্তুত কৃষিকাজে এর কোনো গুরুত্ব ছিল না। এর প্রচলন শুরু হয় পরবর্তীতে ব্যবসায়ীক কাজে। কারণ ব্যবসার প্রয়োজনে তাদের প্রতি মাসে কয়েক দিন পর পর হাট বাজার বসানো কিংবা কর আদায় ইত্যাদির প্রয়োজন পরে। আর এভাবেই প্রচলন হয় week-এর।
সপ্তাহ না বলে কেন বারবার week বলছি, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আসলে week সব সময় সাত দিনের ছিল না। আব্রাহামিক ধর্মগুলোতে week বলতে বোঝায় সাত দিনের একটি চক্র। এই চক্রে মানুষ কাজ করবে, বিশ্রাম নিবে, এবং প্রার্থনা করবে। বাইবেলে বিশ্বের সৃষ্টি করতে লেগেছিল ছয় দিন, এবং সপ্তম দিনে ঈশ্বর বিশ্রামে ছিলেন।
তবে সাত দিনের week-এর শুরুটা কবে হয়েছিল, তা জানা যায় না। ব্যাবিলনিয়ান ক্যালেন্ডারেও মাসের ৭, ১৪, ১৯, ২১ এবং ২৮ তম দিন রাখা হত বিশ্রামের জন্য। Jewish Exile-এর পর ইহুদীরা ব্যাবিলনিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহন করে এবং এমন হতে পারে যে, এখান থেকেই তারা সাত দিনের week-এর ধারণাটি পেয়েছে।
অপরদিকে রোমে হাটবাজারের দিনগুলো আসতো আটদিন পরপর। অনেক পরে খ্রীষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর দিকে সাত দিনের week-এর প্রচলন শুরু হয়। সেখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাতটি গ্রহ (সূর্য এবং চাঁদকেও তারা গ্রহ ধরেছিলেন) পর্যবেক্ষন করেন এবং বলেন যে একেক গ্রহ ২৪ দিনের একেকটি দিনের দায়িত্বে থাকে। এভাবেই রোমে সাত দিনের চক্র শুরু হয়। তারা প্রতিটি দিনের নাম দেয় নিয়ন্ত্রনকারী গ্রহের ভিত্তিতেঃ Saturn’s day, the Sun’s day, the Moon’s day, Mars’s day, Mercury’s day, Jupiter’s day, Venus’s day. এ নামগুলো পরবর্তীতে আরও অনেক সভ্যতায় গ্রহণ করে নেয়। ফ্রেঞ্চ ভাষায় এরা lundi, mardi, mercredi, jeudi, vendredi. জার্মানে নোর্স দেবতার নাম অনুসারে Tiu, Woden, Thor and Freya. আবার আমাদের দেশে শনি, রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি এবং শুক্র।
________________________________________________________________________
পুরো সিরিজ লেখায় আমি বেশ কয়েকটি লেখার সাহায্য নিয়েছি। সেগুলো হলঃ
প্রাচীন ভারতীয় বর্ষপঞ্জিঃ একটি সমীক্ষা – অজয় রায়
বাঙ্গালা সন – ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
বাংলা সনের জন্মকথা – মোবারক আলী খান
বঙ্গাব্দের উদ্ভব কবে ও কোথায় – আহমেদ শরীফ
বাংলা নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ – মুহম্মদ এনামুল হক
নববর্ষঃ আমাদের জন্য – সৈয়দ আলী আহসান
বৈশাখ – আতোয়ার রহমান
বাংলা সন ও পঞ্জিকার ইতিহাস-চর্চা এবং বৈজ্ঞানিক সংস্কার – শামসুজ্জামান খান
উইকিপিডিয়া
A Brief History of the Calendar – David Harper