এইচ এস সি পরীক্ষা প্রায় শেষের পথে।আর মাত্র কিছুদিন পরেই তোমাকে ডিসিশন নিতে হবে,কি নিয়ে পড়তে চাও তুমি,ভবিষ্যতে কি হিসেবে নিজেকে দেখতে চাও।

আমি জানি,হয়তো এরই মধ্যে আর অন্য সবার মতই কেউ কেউ ইঞ্জিনিয়ার কিংবা মেডিকেল ভর্তি কোচিং এ ভর্তি হয়ে গিয়েছো।কিংবা হবে… স্রোতে গা ভাসিয়ে দেবে ।

প্রথমেই বলে নেই,এই লেখাটা কাদের জন্যে।

যারা এখনো ডিসিশন নাওনি কি হবে,নিজেকে দিয়ে কোন কাজ টা সব চেয়ে ভালো হবে,কিংবা কোন প্রফেশন টা বেছে নিলে তোমার কাছে তোমার কাজ আর কাজ মনে হবেনা এই লেখাটা তাদের জন্যে। কিংবা যারা ঠিক করেই নিয়েছোই যে কি হবে তাদের জন্যে ও পরামর্শ রইলো লেখাটা পড়ে দেখার।

আরেকটা ব্যাপারে সতর্ক করতে চাই,হয় লেখা টা পুরো পড়ো নাহয় পড়োইনা।কারণ অর্ধেক পড়লে তুমি যদ্দুর পড়বে তদ্দুরে যেসব সাব্জেক্ট থাকবে এসবের প্রতি তোমার এক ধরনের ফ্যাসিনেশন জন্মে যাবে যা মোটেও উচিত হবেনা।

আচ্ছা এবার কাজের কথায় আসি।
ধর এবার তুমি এইচ এস সি দিয়ে দিলে,পরীক্ষা খুব ই ভালো হল।(না হলে অন্য পরামর্শ থাকবে) কি করবে এবার?

একটা দিন ভাবার জন্যে সময় নাও,এই ১৮-১৯(প্রায়) বছরের জীবনে কোন কাজ টা তুমি সব চেয়ে ভালো পারতে?কিংবা কোন কাজটা করতে তোমার আনন্দ লাগে?

এর উত্তর দুই রকম হতে পারে।প্রথম শ্রেনীঃ যাদের এরকম অনেকগুলো কাজ থাকবে
দ্বিতীয় শ্রেনীঃ যাদের উত্তর হবে,ভাইয়া ছোটো বেলা থেকে তো খেলাধুলা কিংবা কম্পিউটার গেইমস খেলা ছাড়া আর কোনো কাজ ই ভালো লাগেনা।

দ্বিতীয় শ্রেনী যারা আছো তারা চট করে লেখাটার নীচে চলে যাও আর *** দেয়া অংশটা পড়ে ফেলো ,তারপর আবার এখান থেকে পড়া শুরু করো।

ধর, তোমার ফটোগ্রাফী করার অনেক শখ এবং ইচ্ছা,কিংবা ছবি আকা।অথবা ধর ঘুরাঘুরি।
এখন প্রথমে চিন্তা করবে,তুমি কি ভবিষ্যতে নিজেকে একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে দেখতে চাও?আই মিন,শুধুই ফটোগ্রাফার? নাকি বিভিন্ন কিছুর পাশাপাশি ফটোগ্রাফার তকমা টা তোমার নামে লাগুক এটা চাও?
প্রথম টা না হলে ওই বিষয়ক একাডেমিক পড়াশুনা করার কোনো মানে নেই।তোমাকে আরেকটা বিষয় নির্বাচন করতে হবে,আর পাশাপাশি শখের কাজগুলোকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

আরো একটা ব্যাপার আছে।ধর তোমার স্বপ্ন লেখক হওয়া।তাহলে কি তুমি বাংলা কিংবা ইংলিশ নিয়ে পড়বে?কখনোই না।যেসব স্বপ্ন পড়ালেখার পাশাপাশি পূরণ করা যায়,তার জন্যে আলাদা করে একাডেমিক পড়াশুনার দরকার নেই।

এরকম কিছু বিষয় হলঃ লেখক,ফটোগ্রাফার,ফ্রী লেন্সার,গায়ক,নাচিয়ে ইত্যাদি।

ফিল্ম মেইকিং এর ব্যাপারে বলি,যদি ভবিষ্যতে নিজেকে ‘শুধুমাত্র’ ফিল্ম মেকার হিসেবে দেখতে চাও তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ঘ ইউনিটে এপ্লাই করো।চিত্রকর হতে চাইলেও একি পরামর্শ থাকবে,শখের বসে চিত্রকর হলে,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা কখনোই বেটার প্লেইস নয়।

চিত্রকর বলো ,ভাস্কর্যকার বলো সব ই ডিপেন্ড করছে বিষয় টা তুমি কিভাবে নিচ্ছো তার উপর!

এছাড়া,ক্রিকেটার কিংবা ফুটবলার হতে চাইলে এ বিষয়ক অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিজের স্কিল দেখাও,তারা যদি বলেন যে তোমাকে দিয়ে হবে,বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে লেগে পড়।এসব বিষয়ে কিছুটা প্রতিভা ও লাগে,তাই।

এটা অন্য যেকোনো খেলার জন্যেও প্রযোজ্য।

আচ্ছা,কেউ যদি ব্যবসায়ী হতে চাও তার মানে সবসময় এই না যে তোমাকে বিবিএ পড়তে হবে।কারো যদি উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা থাকে তাও একি কথা ই বলবো।

তবে,বিবিএ পড়লেও ক্ষতি নেই,কিন্তু এই না যে,তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ব্যবসা করতে পারবেনা,বা উদ্যোক্তা হতে পারবেনা।

আমার কথা হল,তুমি যা হতে চাও যদি সেই বিষয় নিয়ে না পড়লেও তোমার চলে(মানে তুমি সেই বিষয় নিয়ে না পড়ে ও তুমি তা হতে পারো),তাহলে সে বিষয় নিয়ে পড়ার দরকার নেই।

তাহলে ধরে নিচ্ছি,তুমি এর মধ্যে চিন্তা করে ফেলেছো যে ,তুমি তোমার শখের বিষয়ে উন্নতি করতে হলে সে বিষয় নিয়ে পড়তে হবে কি হবেনা। যদি হয় তাহলে ডিসাইড করে ফেলো কোথায় পড়বে।কিংবা আমাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনালিটিকাল লেখাগুলো ও পড়তে পারো।

না হলে এবার আসি,তোমার কি করা উচিত। তোমাকে পড়াশুনার বিষয় গুলো থেকে এমন একটা বিষয় তোমাকে বেছে নিতে হবে যা পড়লে তুমি তার পাশাপাশি তোমার প্যশন কে ও গুরুত্ব দিতে পারবে।আর একি সাথে এটা ও ভেবে রাখবে, কোন বিষয় নিয়ে পড়লে ভবিষ্যতে তোমার পথ টা কিছুটা মসৃন হবে।

এই বিষয় নির্ধারন করার আগে,তুমি কখনোই চিন্তা করবেনা,কোন বিষয় নিয়ে পড়লে তুমি বেশি টাকার চাকরী পাবে,চিন্তা করবে কোন বিষয়টি তুমি সব চেয়ে ভালো পারো।

ধর, তুমি ফিজিক্স এ কাঁচা, ইংলিশ এ ভালো,তুমি পড়লে ফিজিক্স কারণ চাকরীর মুল্য অনেক।তাহলে কি হবে?যেহেতু তুমি ভালো পারোনা,তোমার সিজিপিএ ফল করবে,ফলে ভালো কোথাও তুমি চাকরী টা পাবেনা।আবার ইংলিশ পড়লে তোমার রেজাল্ট ভাল হত,ইংলিশ বিষয়ক বাংলাদেশের সব চেয়ে ভাল চাকরী টা তুমি ই পেতে।

তার চেয়ে বড় কথা,চাকরীর কথা কম ভেবে ভাবো কোন সাবজ়েক্ট টা পড়লে তুমি একটা কিছু করতে পারবে।

এই যেমন তোমার প্রোগ্রামিং খুব ই ভাল লাগে,অবশ্যই তুমি সি এস ই তে যাও,সার্কিটের প্রতি বুকের ভেতর এক গভীর ভালোবাসা তোমার,তাহলে ইইই ই পড়ো!
কিংবা,হতে চাও আর্কিটেকচারার,তাহলে অভিয়াসলি পড় আর্কিটেকচার।

অথবা ধরো,তুমি বুঝতেই পারছোনা কি নিয়ে পড়লে তোমার জন্যে ভালো হবে,তাহলে তুমি বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা আর্টিকেল গুলো পড়ে ফেলো সময় নিয়ে।তাহলেই আশা করি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে,আর না পারলে যোগাযোগ কর আমাদের সাথে।

আর একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়,যে কোনো বিষয়ে ডিসিশন নেয়ার আগে বাবা মার সাথে কথা বলে নিও,তাদের অবাধ্য হয়ে কিছু করবেনা,প্রয়োজনে তাদের কে বারবার বুঝাও,অন্যদের কে দিয়ে বুঝাও,তবুও তাদের মনে কষ্ট দিয়ে কিছু করতে যেওনা।

তোমার জীবন সুন্দর হোক,সুন্দর হোক তোমার পথচলা,এই প্রত্যাশা ই রইলো।

***তোমরা চিন্তা করে দেখো,পড়ালখার মধ্যে কোন সাবজেক্ট টা তুমি অন্য সাবজেক্ট এর চেয়ে ভাল পারতে।কিংবা উলটা ভাবে চিন্তা করে দেখ,কোন সাবজেক্ট তুমি দুই চোখে ও সহ্য করতে পারতেনা?ভুলেও ওইরকম কোনো বিষয় নিয়ে পড়বেনা।আর শখের কিছু না থাকলে তাড়াতাড়ি বানিয়ে নাও,সব কিছু ট্রাই করে দেখো,যা করতে মজা লাগছে এটাই তোমার শখ!
ফিরে যাও আগের লেখায়।