আপনি কি আপনার জীবন নিয়ে হতাশ? ভাবছেন এখানেই সব শেষ? কখনই আর ঘুরে দাড়াতে পারবেন না 🙁  ? রাস্তায় বিলবোর্ডে লেখা “অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ” দেখে ভাবছেন,সব ঠিকঠাকই চলছে, শুধু আপনিই পিছিয়ে আছেন 🙄  ।

না, আপনি একাই নন, আপনার মতই আমরা সবাই কমবেশি হতাশ। অনলাইন ভিত্তিক একটা জরিপে দেখা যায় শতকরা ৯৯.৯৫ ভাগ মানুষই কোন না কোন বিষয়ে হতাশায় ভুগছেন (আমার ধারণা বাকি .০৫ ভাগ মানুষ মিথ্যে বলেছেন 😡  )। কেউ নিজের অবস্থান নিয়ে হতাশ, কেউ নিজের স্বপ্ন নিয়ে, কেউ সম্পর্ক নিয়ে, কেউ পরিবার কিংবা সমাজ নিয়ে,  কেউ স্যালারি নিয়ে, কেউ সিজিপিএ নিয়ে, কেউ বা আবার গোটা জীবন নিয়েও হতাশ। আবার অনেক জানেনও না যে, তিনি কি কারণে হতাশ।

হতাশ হওয়াটা কি খারাপ? আচ্ছা তাহলে বলুন, ঘুমানো কি খারাপ? আমাদের জীবনের প্রায় ২০-৩০ বছর কাটে ঘুমের মধ্যে, কত সময় নষ্ট করছি আমরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে। কিন্তু তাই বলে ঘুমানো তো খারাপ কাজ না। ঘুমের মাধ্যমে আমরা যেমন দেহঘড়ি’কে রিফুয়েলিং করি, তেমনি হতাশাও আমাদের ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে তোলে, আমাদের টেনে নিয়ে যায় বড় কোন লক্ষ্যের দিকে, অসাধারণ কোন সাফল্যের দিকে। তবে কিছু মানুষ যেমন সারা জীবন ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়, তেমনি কিছু মানুষ কখনই হতাশা থেকে বের হতে পারে না।

হতাশা কতটা নিচে নামতে পারে (নাকি উপরে  🙄 )? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা ঘটনা। বেশ কিছু চরম হতাশাবাদী অনলাইনে একত্রিত হয়েছে। তারা সবাই মিলে ঠিক করল পরদিন কোন এক বড় জাতীয় ইস্যুতে তারা সবাই শহরের কোন এক জায়গায় সমাবেশ করবে। সমাবেশে ঐ জাতীয় ইস্যু নিয়ে হতাশা প্রকাশ করবে। সবাই রাজি, কিন্তু পরদিন দেখা গেল কেউই আসে নি। পরে জানা গেল সবাই ভেবেছিল, এই সমাবেশ কখনো সফল হবে না, সম্ভব হবে না এমন সমাবেশ করা।

হতাশা (Depression) অনেকটা চোরাবালি’র মত; একবার ফাঁদে পড়লে খুব ধীরে ধীরে তলিয়ে যেতে হয়। প্রথমে শুরু হয় স্বাভাবিকভাবেই, কিন্তু ধাপে ধাপে চরমপন্থার দিকে অগ্রসর হয়। আমরা ধাপগুলোকে এভাবে সাজাতে পারিঃ

  1. পারফেকশনিসমঃ প্রথমদিকে মনে হয়, “আমাকে সবকিছুই একদম নিখুঁতভাবে করতে হবে। নিখুঁতের চেয়ে একচুল কম হলেও হবে না, সেটা বাতিল।” আসলে নিখুঁত বলে তো কিছু নেই, সবই মিডিয়ার সৃষ্টি।
  2. ইতিবাচক দিক বাতিলঃ সবকিছুর ইতিবাচক দিককে অবচেতন মনে বাতিল করতে থাকি। কোন প্রাপ্তি কিংবা সাফল্য পেলেও বুঝতে পারি না। মনে হয় সবকিছুই ব্যর্থতা। কোন ভাল ব্যাপারেও মুখ বাঁকিয়ে বলি, “খারাপ না” 😕  ; “ভাল” বলতে চাই না।
  3. নেতিবাচক মনোভাবঃ আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না, আমি একটা ধোঁকাবাজ। মানুষ যদি আমার আসল রূপ জানত, তবে সবাইই আমাকে ঘৃণা করত 🙄  ।
  4. চরম্পন্থিঃ সবকিছুই খারাপ।মনে হয়, আমার সাথে যদি কিছু ঘটে, তবে সবচেয়ে খারাপ (wrost) টাই ঘটবে। জীবনের কোনই মানে খুঁজে পাই না 😥  ।

অনেকটা এভাবেই আমরা চরমপন্থার দিকে আগাতে থাকি, টেরও পাই না। এবং মাঝে মাঝে এর পরিণতি আত্মহত্যা পর্যন্ত গড়ায়। সকল আত্মহত্যার পেছনে রয়েছে গভীর হতাশা। এখানে প্রথম ধাপে এলে দ্বিতীয় ধাপে যাওয়ার সম্ভাব্যতা দাঁড়ায় ৫০%, দ্বিতীয় ভাগে এসে পৌঁছলে তৃতীয়ে যাওয়ার সম্ভাব্যতা ৭০% এবং তৃতীয়ে এলে চতুর্থে যাওয়ার সম্ভাব্যতা ৯০% এসে দাঁড়ায়। তাই প্রথমেই উপর্যুপরি ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

প্রশ্ন হচ্ছে, হতাশা তো আর আবেগ না, তাহলে এত্ত হতাশা আসে কোথা থেকে? ব্যর্থতা থেকে? কিংবা অন্যের সাফল্য দেখে? না, হতাশার পেছনে এটাই একমাত্র কারণ না।

হতাশা’র পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখে জেনেটিকাল ফ্যাক্টর কিংবা বংশ-পরম্পরা 😯  । Douglas F. Levinson, M.D., Department of Psychiatry and Behavioral Sciences (Stanford University, USA) এর গবেষণায় দেখা যায়, হতাশাগ্রস্থ হওয়ার জন্য জেনেটিকাল ফ্যাক্টর শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ দায়ী। মানসিক ও বাহ্যিক ফ্যাক্টর জড়িত বাকি ৫০ ভাগের ক্ষেত্রে।

তাহলে, হতাশা’র জন্য কি কোন জিন দায়ী? ব্যাপারটা একটু ঘোলাটে। ধারণা করা হচ্ছে ডায়াবেটিস কিংবা হাই-প্রেশার যেরকম কিছু জেনেটিকাল ফ্যাক্টরের বিশেষ কম্বিনেশনের ফলে হয়, তেমনি হতাশা’ও একই কারণে হয়। আসল কারণ আমরা এখনও জানি না।

এছাড়া হতাশা’র পেছনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে কোন বিব্রতকর পারিবারিক ঘটনা, যৌন নির্যাতন, মাদকাসক্তি ইত্যাদি। এর সাথে সাথে ব্যর্থতা, অন্যের সাফল্য, সমালোচনা, অত্যধিক সিরিয়াসনেস ইত্যাদিও দায়ী।

তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, বাঙ্গালীর অধিক হতাশা’গ্রস্ততার কারণ সম্পূর্ণই কিংবা অধিকাংশই জেনেটিক। কেননা গোটা একটা জাতিই যখন নৈরাশ্যবাদি, তখন জেনেটিক ব্যাপার-স্যাপার হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কতটা নৈরাশ্যবাদী, যে চারিদিকে অসংখ্য অনিয়ম দেখেও প্রতিবাদ করতে চাই না, কারণ জানি যে, কোন প্রতিকার হবে না। কেউ ভাল কাজের উদ্যোগ নিলে উৎসাহ তো দূরের কথা, তাকে যথেষ্ট হেনস্থা করতেও দ্বিধা করি না। সবকিছুর মধ্য থেকেই নেতিবাচক দিক খুঁজে ফিরি। শুধু আমজনতাই নয়, আমাদের শিক্ষিত-সুশীল-প্রচণ্ড চিন্তাবিদ’রাও যে কি রকম নৈরাশ্যবাদী তা আমাদের টকশোগুলো দেখলেই বোঝা যায়। তবে আশা’র কথা আমরা এখনও চরমপন্থায় পৌঁছাই নি, ২য়/৩য় ধাপেই রয়েছি।

তা যাই হোক, হতাশা দূর করব কীভাবে?  ➡

প্রথমেই একটা থেরাপি’র কথা বলি, যার কেতাবি নাম   Cognitive Therapy । আপনার একটা ডায়েরী থাকবে, সেখানে আপনি আপনার সব নেতিবাচক চিন্তাভাবনা লিখবেন। এবং প্রতিটা চিন্তা ভাবনা এনালাইসিস করবেন। এভাবে করতে থাকলে একসময়ে হতাশা কাটতে শুরু করবে। এই থেরাপি ১০০ ভাগ কার্যকরী ও এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই 😛 ।

এছাড়াও আরেকটা কাজ করতে পারেন, যোগব্যায়াম করুন নিয়মিত।  যোগব্যায়াম করলে যেটা হবে, তাহল আপনার দেহ রিলাক্স মুডে আসবে, যার এফেক্ট পড়বে আপনার মনের উপরেও। তাছাড়া যোগবায়ামে নিজের চিন্তাভাবনার ওপর দখল আসে, যেটা খুব কাজে দিবে হতাশা কাটাতে। [ এটা বিশেষজ্ঞদের কথা, ব্যক্তিগতভাবে যোগব্যায়াম আমার কাছে ভন্ডামি ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না]

হতাশা প্রতিকার কিংবা প্রতিরোধে আরো কিছু পরামর্শ ও উপদেশ দেই। পরামর্শগুলোর আইডিয়া নেয়া হয়েছে ডেল কার্নেগীর বই, শিব খেরা’র বই, টমাস এর বক্তৃতা, সুশান্ত পালের বক্তৃতা থেকে; আর উপদেশ গুলো আমার অনুর্বর মস্তিষ্ক-প্রসূতঃ

  • চীনা দার্শনিকের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেনঃ  যেকোন ঘটনার জন্য, মনে মনে সবচেয়ে খারাপ কি হতে পারে ভেবে নিন; এবং সবচেয়ে খারাপ’টাকেই মেনে নিন । এরপর ধীরে ধীরে সবচেয়ে খারাপ থেকে নিজেকে উত্তরণের চিন্তা করুন। সাধ্যমত চেষ্টা করে যান, যাতে সবচেয়ে খারাপ না ঘটে। চেষ্টা বিফল হলেও হারানোর কিছুই নেই। কারণ আপনি সবচেয়ে খারাপ টাকেই মেনে নিয়েছেন। যা উন্নতি, তার সবটাই লাভ। 🙂
  •  কাজে ব্যস্ত থাকুন। যাতে হতাশা নিয়ে চিন্তা করার সময়ই না পান । জর্জ বার্ণাড’শ বলেছেন- “দুঃখী হয়ে ওঠার রহস্য হল আপনি সুখী না দুখী ভাবতে পারার মত সময় থাকা।” সুতরাং এসব হাবিজাবি নিয়ে চিন্তার কোনই দরকার নেই (যতদিন না হতাশামুক্ত হচ্ছেন)।
  • “শুধু একটা সেকেন্ড, একটা সুখবর আপনার জীবনের মোড় বদলে দিতে পারে। অদ্ভুত একটা মুহূর্ত আগের সব কষ্টকে ভুলিয়ে দিতে পারে। আল্লাহ কখনোই কাউকে চিরদিন অসম্মানিত করে রাখেন না। স্বপ্নের দিনটার জন্যে বিনয়ের সাথে অপেক্ষা করতে হবে এবং মন থেকে বিশ্বাস করতে হবে, দিনটা আসবেই।” – সুশান্ত পাল
  • ছোটখাটো ব্যাপারগুলো’কে পাশ কাটিয়ে যান, এসব ছোট বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হওয়াটা মানুষের শোভা পায় না।
  • নিজের ইগোকে বিসর্জন দিন। মনে করুন আপনিই ভুল, বাকি সবাই ঠিক।
  • জীবনে যা পেয়েছেন তারই হিসেব করুন, যা পাননি তার নয়। আমি ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিতে পারি, হিসেবে কখনো ঠকবেন না 🙂  ।
  • অন্যে আপনাকে নিয়ে কি ভাবছে তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করবেন না, কারণ, আপনিও তো অন্যের সম্পর্কে অনেক কিছুই ভাবেন; লজ্জা লাগে না?  😡   আর অন্যে আপনাকে নিয়ে ভাবছে এর মানে হল, অন্যে আপনাকে লক্ষ্য করছে, আপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তো আপনার কেন এতে মাথাব্যাথা?
  •  যেটা নিশ্চিত ঘটবেই, সেটাকে মানতে শিখুন। চিন্তা করুন এভাবে – “এটা এই রকম। কারণ এটা অন্যরকম হতে পারে না।”
  • যে বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্ত, খুব ঠান্ডা মাথায় ভাবুন তো; যে এই বিষয়টা আসলেই ততটা গুরুত্বপূর্ণ কিনা? এতে আমার কিছু আসে যায় কি? নাকি বৃথা চিন্তা করছি? শতকরা ৭০ ভাগ দুশ্চিন্তারই কোন উপযুক্ত কারণ থাকে না 😯  ।
  • “আপনি নিজেকে যা ভাবেন আপনি তা নন, আপনি নিজে যা ভাবেন আপনি তাই”। তাই স্বার্থপর না হয়ে, নিজের কাজে মন দিন; ঠিকই নিজেকে এক সময়ে অন্য উচ্চতায় দেখতে পাবেন 🙂 ।
  • যাকে পছন্দ করি না, তার জন্য এক মিনিটও ভেবে সময় নষ্ট না করি। সকল লস-প্রোজেক্টই হতাশা ফিরিয়া আনে।
  • হাওয়া বদলিয়ে আসতে পারেন; দূরের কোন জায়গা থেকে ঘুরে এসে আবার নতুন করে চিন্তা শুরু করুন।
  • ডেল কার্নেগী’র বই অনুসারে লিচফিল্ডের সমাধানঃ একটা কাগজ নিন আর তাতে লিখে ফেলুনঃ
  1.  কি জন্য হতাশ আমি?
  2.  এর জন্য আমি কি করতে পারি?
  3.  কি করব (লিস্ট)
  4.  কখন করব।

হতাশা যদি মানুষের উপর জয়ীই হত, তাহলে…

  • নিজের তৈরি কোম্পানি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরও ……স্টিভ জবস হত না
  • হাই-স্কুল বাস্কেট বল টিম থেকে বাদ পড়ার পরও……… সর্বকালের অন্যতম সেরা বাস্কেটবল প্লেয়ার –  মাইকেল জর্ডান হত না
  • বল বয় ছেলেটি …… শ্চীন টেন্ডুলকার হত না
  • বস্তি’তে জন্মানো ছেলেটি …… পেলে হত না
  • ‘টিভি’র জন্য ফিট না’ বলে বাদ দেয়ার পরও ……সর্বকালের সেরা টিভি উপস্থাপক অপ্রা উইনফ্রে হত না
  • পরপর ৮ বার নির্বাচনে হারার পরও ……  আব্রাহাম লিঙ্কন হত না
  • সস্তা আইডিয়ার জন্য বারবার পত্রিকায় রিজেক্টেড হওয়ার পরও ……… ওয়াল্ট ডিজনি হত না
  • ১০০০০০ বার ব্যর্থ হওয়ার পরও  …… টমাস আলভা এডিসন কর্তৃক লাইট আবিষ্কৃত হত না
  • ক্যাফে’তে কাজ করা …ডিভোর্সড…কপর্দকশূন্য মানুষটি ……  জে.কে.রাউলিং হত না
  • ট্রাক ড্রাইভার থেকে ……মারভেল স্টুডিও এর মালিক হতেন না…
  • স্কুল ড্রপ আউট, কলেজ-ভার্সিটি ড্রপ আউট মানুষগুলো … আইনস্টাইন…টমাস আলভা এডিসন… রবীন্দ্রনাথ … বিল গেটস হত না
  • ব্যবসায় মার খেয়ে দেউলিয়া হওার পরও মানুষগুলো …… হেনরি ফোরড ( Ford Automobiles)….হত না
  • রাইস কুকার কোম্পানী তে ভড়াডুবির পরও ……আকিও’র হাত ধরে সনি কোম্পানির জন্ম হত না
  • অভিনয়ে আবেগ না থাকার কারণে প্রথমেই রিজেক্টেড হওয়ার পরও  …… চার্লি চ্যাপলিন হত না
  • অভিনয়ে অদক্ষতা ও অনাকর্ষণীয় হওয়ার কারণে রিজেক্টেড হওয়ার পরও  …… মেরেলিন মনেরো হত না
  • প্রথমেই রেকর্ডিং কোম্পানী থেকে রিজেক্টেড হওয়ার পরও…… The Beatles এর জন্ম হত না

এরকম অজস্র উদাহরণ দেয়া যায়।

নিকোলা টেসলা’র গল্প বলি, অসম্ভব মেধাবী এই গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে ১ম বর্ষ, ২য় বর্ষে ১ম হওয়ার পর ৩য় বর্ষে উঠে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। জুয়া-মদ-বিলিয়ারডে আসক্ত হয়ে তিনি ৩য় বর্ষেই ড্রপ আউট হন। হতাশাগ্রস্ত অবস্থাতেই তিনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। এরপর বাকিটা ইতিহাস……নিকোলা টেসলা এর সাফল্যগাথাঃ আধুনিক ইলেকট্রিক এর সুত্রপাত তার মাধ্যমেই; এসি কারেন্ট দিয়ে কি করা যায়, কি করা যেতে পারে তার সবই এসেছে তার হাত ধরে। প্রথম রাডার এর থিওরি, রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি,  কৃত্তিম ভুমিকম্পযন্ত্র, রিমোট কন্ট্রোল, বল লাইটেনিং, নিওন লাইট, ইলেট্রিক মোটর, তারহীন প্রযুক্তি, ডায়নামো ইলেক্ট্রিক মেশিন কম্যুটেটর, এমপ্লিফায়ারের আধুনিকরণ, ডিসি জেনারেটর ডিজাইন, রোটেটিং ম্যাগনেটিক ফিল্ড এর ধারণা, ট্রাঞ্জিস্টরের উপাদান, হাইড্রোইলেক্ট্রিসিটি, বহির্জাগতিক রেডিও ওয়েভ ধারণ, কৃত্তিম বজ্রপাত  ইত্যাদি সবই তার অবদান।

শেষে রোমান কবি হোরেস এর কবিতার চরণ বলি –

“সেই মানুষই  সবার চেয়ে সুখী,

যিনি আজকের দিনকে নিজের করতে পেরেছেন।

তিনিই শ্রেষ্ঠ, যিনি বলেন,

“আমি আগামীর বিপদকে ভয় করি না, কারণ আমি আজ বেঁচেছি।”

তাই অন্তত আজকে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার (survive) করার চেষ্টা করুন। দেখবেন হতাশা কাছেও ভিড়বে না।

সুতরাং …… “হতাশ হইও না, যদি মুমিন হও।”

পুনশ্চঃ   প্রচণ্ড হতাশা নিয়ে অনেকদিন পর লিখলাম, মূলত হতাশা কাটানোর জন্যই লিখলাম। কৃতজ্ঞতাঃ ডেল কার্নেগী, টমাস, শিব খেরা, সুশান্ত পাল, আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ এবং সেই সকল স্যার, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্খী, যারা হতাশা’র ফাঁদ থেকে হাতে হাত রেখে উদ্ধার করেন, বিশ্বাস দিয়ে যান পাশে থেকে।    

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে একটা পরামর্শ দেইঃ আমার দৃষ্টিতে “হতাশা হল মানুষের স্বপ্ন আর বাস্তবতা’র মাঝে একটা n-ডাইমেনশনাল খাদ।” তাই আমার পরামর্শ স্বপ্ন দেখবেন ভাল কথা, বুঝে-শুনে দেখুন। স্বপ্নে’র ভেলায় চড়ে খাদের কিনারায় চলে যাবেন না। তার আগেই মাটিতে নেমে আসুন।