আমার ক্লাস শুরু হয় ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় – স্বপ্নের একটা জায়গা। নাম শুনেই মনে হয়েছিল জ্ঞানচর্চার শুদ্ধতম স্থান এই বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরই একটা অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। দেখা গেল এখানে অনেক ফ্যাকাল্টি রয়েছে। ফ্যাকাল্টিগুলোর মধ্যে আছে আবার অনেক ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের মধ্যে নেয় কোনো যোগাযোগ। আমার মনে হয়েছিল জ্ঞান চর্চার জন্য মোটেও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নয় এটা। দেশের ভবিষ্যৎ যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে নিহিত তার যদি এই অবস্থা হয়,  দেশের শিক্ষা ব্যবস্থারই বা কী হাল! 

সে চিন্তা থেকেই ঠিক করলাম, কিছু একটা করা দরকার। আর কিছু একটা করার প্রয়াস থেকেই আমাদের এই স্বশিক্ষা। প্রথমে অনেকের কাছেই গেলাম এই আইডিয়া নিয়ে। কারো মধ্যেই তেমন একটা আগ্রহ দেখা গেল না। কথা হল সাদমান সাকিবের সাথে। তারও একই ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই। তো আমরা দুইজন মিলেই শুরু করলাম লেখালেখি। এভাবেই এক স্বপ্নে বাঁধা আমরা দুইজন মিলে আস্তে আস্তে স্বশিক্ষা-তে কন্টেন্ট বাড়াতে থাকি। পরে এসে যুক্ত হয় দৃষ্টি বাঁধন সরকার। এক পর্যায়ে এসে দেখি ৩৩ টা লেখার মধ্যে ২২ টা লেখা আমার, ৭ টা এই দুইজনের, আর ৩ টা অন্যদের। 😀 যদিও হতাশ লাগতো, কিন্তু আমাদের সেমিস্টার ফাইনালের পরই খুব দ্রুত বদলে যেতে থাকে সব কিছু। নিজের ডিপার্টমেন্ট ছাড়িয়ে অন্য ডিপার্টমেন্ট হয়ে এমনকি অন্য ভার্সিটিতেও ছড়িয়ে যেতে থাকে স্বশিক্ষা-র বিস্তার। এরই মধ্যে আমাদের সাথে এসে যুক্ত হোন আমার ডিপার্টমেন্টেরই একজন বড় ভাই ফারহাদ নাঈম ভাইয়া। উনি হোস্টিং-এর জন্য ডোনেশন থেকে শুরু করে সাইটের ডিজাইনিং নিয়েও করেছেন প্রচুর সাহায্য।

তো এটাই ছিল সংক্ষেপে আমাদের ইতিহাস! এবার আমাদের পরিচয় পর্ব। 😀

System Administrator

মুনতাসির ওয়াহেদ

11791787_1708587589353822_406157898_nআমার কথাঃ আমি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত। এর আগে ছিলাম যথাক্রমে অংকুর সোসাইটি স্কুল, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এবং চট্টগ্রাম কলেজে।

খুব সংক্ষেপে নিজের সম্পর্কে বলতে গেলে আমি সবসময় এই কথাটায় বলিঃ Honest, introvert, courteous, egoistic, witty, arrogant and a true patriot. Yeah, that’s me, in a nutshell, ’cause I am a nut. 😀

“মা তোর বদন খানি মলিন হলে আমি নয়ন…
ওমা আমি নয়ন জলে ভাসি।

সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি । ”

এই দেশটাকে ভালবাসি প্রাণ দিয়ে, একে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। যদিও আজ পর্যন্ত কিছুই করতে পারলাম না। কিন্তু একদিন পারবোই, ঈনশাআল্লাহ।

আর সেটা স্বশিক্ষা ডট কম দিয়ে হলে তো আরও ভাল! 🙂

Author & Editor

সাদমান সাকিব

তার কথাঃ আমি মোঃসাদমান সাকিব। পড়ছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগে,২১ তম ব্যাচে। এর আগে কলেজ জীবন পার করে এসেছি ঢাকার নটরডেম কলেজে,আর স্কুল ছিলো মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজ।Saadmaan

নিজে যখন কোনকিছু শিখি,তখন মজা লাগেনা। কিন্তু নিজে যা শিখলাম তা যদি আরেকজনকে শিখাতে পারি,তখনই আসল মজাটা লাগে! ক্লাস টেনের দিকে আমার জুনিয়রদের নানারকম প্রশ্নের উত্তর আমি ফেইসবুকের ইনবক্সে লিখে লিখে দিতাম। কাঁচা হাত ছিলো,জানতাম ও কম। তাদের প্রশ্নের ধরণ দিন দিন পাল্টাতে লাগলো,আর সেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে আমি নিজেও শিখলাম অনেক কিছু। এগুলো করতে করতে কেন যেন মনের ভেতর একটা ইচ্ছা হলো,আচ্ছা,আমরা এমন একটা অনলাইন স্কুল কি খুলতে পারিনা,যেখানে পড়াশোনাটা হবে এরকমই,মানুষ সেই স্কুলে যাবে শুধু ”জানার” জন্য! সম্ভব হলে কিছু জানিয়ে দিয়েও আসবে! এমনটা কি সম্ভব?

স্বপ্নটাকে বেঁধে রেখে দিয়েছিলাম দুই বছরের জন্য। ইচ্ছা ছিলো ভার্সিটি তে ভর্তি হয়েই কাজ শুরু করে দিবো। পরে বিভিন্ন হেলায় ফেলায় আর তা হয়ে ওঠেনি শুরুর দিকে।

তারপর ভার্সিটিতে আমারই ক্লাসের চট্টগ্রামবাসী মুনতাসির কে খুঁজে পেলাম,যার ইচ্ছাটা আমার সাথে মিলে যায়। সেও আমার স্বপ্নটার মতোই একটা স্বপ্ন দেখে! দুইজন মিলে আলোচনা করলাম,ফেইসবুকের ইনবক্স গরম করলাম,প্ল্যান করলাম। তারপরে মুনতাসির ওয়েবসাইটটার একটা কঙ্কাল দাঁড় করিয়ে ফেললো এক-দুইদিনের মাথাতেই!

…আমরা হামাগুড়ি দিয়ে আমাদের কাঁচা রাস্তাটা ধরে আগানো শুরু করে দিলাম। আল্লাহ রহমতে এখন রাস্তাটা কিছুটা মসৃণ। এখন আমাদের হাঁটতে তেমন অসুবিধা হয়না। আগে আমি পরে গেলে মুনতাসির টেনে তুলতো,মুনতাসির পরে গেলে আমি টেনে তুলতাম। ঠিক যেদিন আমরা দুইজন একসাথে পরে যেতাম হাঁটতে হাঁটতে,দৃষ্টি আমাদের টেনে তুলতো। 🙂 এখন আর টেনে তোলার মানুষের অভাব হয়না। তিনজন পরে গেলে আমাদেরকে কম করে হলেও আরো ২০ জন টেনে তোলে! একটি পরিবার থেকে বিশ্বাসের ভিত্তিটা তৈরি হয়। পরিবার থেকে মানুষ শুরুটা করে শিক্ষার।

এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিলো,এটাই আমাদের পরিবার। স্বশিক্ষা একটি ওয়েবসাইটই না,এটি একটি পরিবার,যেখানে কেউ একা নয়।

দৃষ্টি বাঁধন সরকার

11737962_991352874242946_5341503677413237607_n

তার কথাঃ দৃষ্টি, পড়ছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনপ্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগে। এইচএসসি পাশ করেছি নটর ডেম কলেজ থেকে, তার আগে ঠিকানা ছিল বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ।

বেবাকে চেনে Christy Brandon Sharkstar হিসেবে, লেখালেখিও করি এই নামেই। অন্যের কাজে আসাটাই জীবনের নামান্তর বলে বোধ হয় আমার কাছে। তাই তো বন্ধু সাকিব আর মুনতাসিরদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শামিল হয়েছি “স্বশিক্ষা” কে গড়ে তোলার মিশনে। স্কুল বা কলেজ লেভেলে আমাদের বইপত্রের অবস্থা বেশি ভাল নয়। বিষয়বস্তুর ম্যাড়মেড়ে উপস্থাপন ও দুর্বোধ্যতা যে কত ছেলেমেয়ের জীবনে যে পড়াশোনাকে আতংক বানিয়ে ছেড়েছে তার ইয়ত্তা নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় জীবনে “পড়া” কখনো স্থায়ী হয় না, স্থায়ী হয় “শেখা”টা। শেখার আনন্দ মানুষকে প্রতিবারে নতুন করে জন্ম দেয় যেটা বাধ্যবাধকতায় মোড়ানো পড়া করতে পারে না। আর শিখতে হলে কোনো গন্ডির কথা ভেবে নিলে চলে না মোটেও। নিজে শিখতে, বুঝতে ও তথায় আনন্দলাভ করতে যেসব ছেলেমেয়েরা আগ্রহী তাদের জন্যই মাতৃভাষায় আমাদের এই উদ্যোগ।

ছদ্মনাম যেমনই হোক, বাংলা ছাড়া আমার হজম হয় না কিছুই! যে শেখার কথা বলছি, ইন্টারনেটে শিখতে রিসোর্স আছে কিন্তু প্রচুর। তবে ইংলিশ দেখে কি আর আত্মার শান্তি হয়? তাই তো আর্টিকেলগুলো সহজ করে বাংলায় লেখার চেষ্টা করে যাই সবাই। দল ভারী হচ্ছে এখন, কাজও ভাল হচ্ছে ধীরে ধীরে। আশা রাখি মানসম্মত ও যুগোপযোগী অনলাইন শিক্ষামূলক সাইট হিসেবে স্বশিক্ষাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে একযোগে সবাই এভাবেই কাজ করে যেতে পারব।

সফলতা আসবে একদিন, তাতে বিশ্বাস করি। কারণ স্বপ্ন তো কেবল দেখার জন্য নয়, তা সত্যি হবার জন্যও বটে!

# ফারহাদ নাঈম

Snap 2015-07-26 at 00.56.14

তার কথাঃ

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগ থেকে গ্র্যাজুয়েট করি ২০১২ সালে।

এর আগে আমি পড়েছি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এবং রাইফেলস পাবলিক কলেজে।

নিজ তাগিদে শিখবো ,

নিজের থেকে শিখবো ,

বাংলা ভাষায় শিখবো ।
এটাই তো স্বশিক্ষা-র মূলমন্ত্র !

এছাড়াও সাইটে বর্তমানে (২৫ জুলাই, ২০১৫) আছেন ১৭ জন লেখক।

Author

(১) আজওয়াদ আনজুম দীপ্ত – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(২) ঋদ্ধ রিদওয়ানুল হক – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(৩) দীপ জ্যোতি ঘোষ

(৪) সালেহীন শুভ – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(৫) রিয়াদ আশরাফ – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, বুয়েট

(৬) গালীব – সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(৭) রেদওয়ান আহমেদ রিজভী – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(৮) আবিদ আবরার – ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট

(৯) এটিএম জাহিদ হাসান – নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(১০) মেসবাহ তানভির – কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(১১) সাকিব আবরার – চট্টগ্রাম কলেজ

(১২) মোহতাসিম নাকিব – ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট

(১৩) সৌমিক দাস সৌম্য – ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(১৪) মৃদুল দত্ত – জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(১৫) ফাইরোজ মায়িশা – ঢাকা মেডিকেল কলেজ

(১৬) ইমরানুল হল সাকিব – রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ

(১৭) মীর মুবাশির খালিদ – জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  (অ্যালামনাই)

এবং এই তালিকা ক্রম বর্ধমান! 🙂

Muntasir Wahed

Muntasir Wahed

System Administrator at স্বশিক্ষা.com
Jack of all trades, master of none.
Muntasir Wahed
Muntasir Wahed