প্রথম পর্বে আমরা সরল ছন্দিত স্পন্দনের বৈশিষ্ট্য ও সমীকরণ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম; এবারে আমরা দেখব এই সমীকরণের কাজ ও কার্যকারিতা, আরো আলোচনা হবে দশা, দশা ধ্রুবক ও সরল ছন্দিত স্পন্দনের শক্তি নিয়ে এবং…।
সরল ছন্দিত স্পন্দনের সমীকরণ:
y = Asin ωt =Asinϴ
এখানে ωt অথবা ϴ রাশিটি হচ্ছে কণার গতির দশা। কোন নির্দিষ্ট সময়ে (t) কোন কণার দশা বলতে বুঝি, ঐ নির্দিষ্ট সময়ে কণার গতির সামগ্রিক অবস্থা (অর্থাৎ কণার সরন, বেগ, ত্বরণ, বল ইত্যাদি)। এবং ωt অথবা ϴ কোণ বিধায়, একে দশা কোণও বলা হয়ে থাকে। প্রশ্ন হতে পারে যে, কোণ (দশা) কীভাবে গতির সামগ্রিক অবস্থা নির্দেশ করে? আসলে দশা কোণ জানা থাকলে সহজেই এর মাধ্যমে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের কৌণিক বেগ বের করতে পারি ( ω =ϴ/t দিয়ে ), কৌণিক বেগ বের করতে পারলে তা মুল সমীকরণে (y = Asin ωt) বসিয়ে সরণ বের করতে পারি, এরপর সরণকে সময়ের সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে অন্তরীকরণ (Differentiate: dy/dx) করলেই যথাক্রমে বেগ ও ত্বরণ পেয়ে যাব; এরপর ত্বরণ থেকে বল বের করার জন্য নিউটন আছে তো আছেই। একটা সমস্যা কিন্তু রয়েই গেল, ধরতে পেরেছ? হুম, A (বিস্তার) এর মান কোথায় পাব? বের করে নিব; সেটা বের করতে অবশ্য দশা ধ্রুবক লাগবে।
দশা ধ্রুবক আবার কি? দশা ধ্রুবক হল আমাদের পর্যবেক্ষণ শুরুর সময়ের দশা। একে δ (ডেল্টা) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সরল ছন্দিত স্পন্দনের সমীকরণ বের করার সময়ে আমরা ধরে নিয়েছিলাম গতি সাম্যাবস্থান (0 degree) থেকে শুরু হচ্ছে। কিন্তু সব সময়ে কি আর গতি সাম্যাবস্থান থেকে শুরু হবে? মাঝে মাঝে আগে-পিছে থেকেও শুরু হতে পারে না? অনেকটা সরলরৈখিক গতির আদিবেগ এর মত, সবসময়ে আদিবেগ তো আর 0 থাকেনা, মাঝে মধ্যে আগে থেকেই গতিশীল থাকে। তেমনি এখানেও আমাদের কণা আগে/পিছে থেকে গতি শুরু করতে পারে। তাই এখানেও আদি-দশা…., না আদি-দশা নয় দশা ধ্রুবক থাকে। আদি-দশা বললে কি সমস্যা? সমস্যা আছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক চলমান স্পন্দন যেমন হার্ট-বিট,পরমানুর কম্পন ইত্যাদির ক্ষেত্রে আদি-দশা কীভাবে পাব? পরমানুর আদি-দশা খুঁজতে বিগ-ব্যাঙ্গের কাছে যাওয়া লাগবে। তাই আদি-দশা না বলে পর্যবেক্ষণ শুরুর অবস্থা ধরা হয় এবং একে দশা ধ্রুবক বলা হয়।
যাই বলি না কেন, আমাদের আলোচনায় নতুন একটি রাশি (দশা ধ্রুবক) যুক্ত হয়েছে, তো আমাদের সমীকরণ বদলাতে হবে না? কীভাবে বদলাব? খেয়াল করে দেখি, আমাদের নতুন রাশি দশা ধ্রুবক হল একটি কোণ যা নির্দেশ করে পর্যবেক্ষণ শুরুর সময়ে আমাদের কণা কত দশা কোণে এগিয়ে ছিল অথবা পিছিয়ে ছিল। তাহলে আমরা আমাদের সমীকরণ কে এভাবে লিখতে পারি ,
y = Asin (ωt + δ)
এবং এ সমীকরণ ই হল সরল ছন্দিত স্পন্দনের সাধারন সমীকরণ । একে আমরা পর্যায়-ক্রমে অন্তরীকরণ করে বেগ ও ত্বরণ পেতে পারি,
v = ω A cos (ωt + δ)
a = – A ω2 sin(ωt + δ) = – ω2 y
এবার দেখা যাক , ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে সমীকরণে দশা ধ্রুবক ব্যবহার করব? যে সকল ক্ষেত্রে কণার গতি সাম্যাবস্থান থেকে শুরু হয় যেমন ( তাড়িত-চৌম্বক তরঙ্গ ইত্যাদি) সেখানে দশা ধ্রুবক হবে 0 ডিগ্রি। অর্থাৎ একেবারে মূলবিন্দু/সাম্যাবস্থান থেকে শুরু হচ্ছে। এক্ষেত্রে,
y = Asin (ωt + 0) = Asin ωt
আর যে সকল ক্ষেত্রে গতি শুরু হয় কোন নির্দিষ্ট দশা ধ্রুবক থেকে যেমন ধরি দশা ধ্রুবক 30 ডিগ্রি; তখন সরাসরি দশা ধ্রুবক (30) ব্যবহৃত হবে।
কিন্তু যে সকল ক্ষেত্রে গতি শুরু হয় বিস্তারের প্রান্ত বিন্দু থেকে যেমন ধরুন সরলদোলক কিংবা স্প্রিং এর ক্ষেত্রে, এসব ক্ষেত্রে আমরা সরলদোলক অথবা স্প্রিং কে টেনে একপাশে এনে তারপর ছেড়ে দেই, গতি শুরু হয়ে যায়। কেউ এক পাশে না টেনে একদম সাম্যাবস্থান থেকে সরলদোলক কিংবা স্প্রিং কে গতিশীল করতে পেরেছে বলে আজ পর্যন্ত শোনা যায় নি। তাই যেহেতু গতি শুরুর সময়ে কণার অবস্থান সর্বোচ্চ বিন্দুতে তাই এক্ষেত্রে আমরা দশা ধ্রুবক 90 ডিগ্রি ব্যবহার করব। কারণ 90 ডিগ্রি দশা কোণেই কণা সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকে ( চিত্র দ্রষ্টব্য)।
তাই এক্ষেত্রে,
y = Asin (ωt + 90) = Acos ωt
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, সরলদোলক কিংবা স্প্রিংএর ক্ষেত্রে y = Acos ωt কার্যকর (y = Asinωt নয়!)।
সরল ছন্দিত স্পন্দনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তত্ত্বীয়ভাবে এখানেও শক্তির সংরক্ষন নীতি অনুসৃত হয়। সরলছন্দিত স্পন্দনের ক্ষেত্রে বিভব শক্তি ও গতিশক্তি,
U = ½ kx2 = ½ k A2 sin2 (ωt + δ)
K = ½ mv2 = ½ m ω2A2 cos2 (ωt + δ)
তাহলে মোট শক্তি ,
E = U + K = ½ kx2 + ½ mv2 = ½ kA2 cos2 (ωt + δ) + ½ k A2 sin2 (ωt + δ)= ½ kA2
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে যাই, প্রাকৃতিক ভাবে আমরা যত স্পন্দন গতি দেখতে পাই তার সবই তত্ত্বীয়ভাবে সরল ছন্দিত স্পন্দন (ত্বরন সরণের সমানুপাতিক)। তবে কৃত্রিমভাবে এমন স্পন্দন গতি তৈরি সম্ভব যা সরল ছন্দিত স্পন্দন। যেমন ধরুন দুপাশে ২টি চুম্বক রেখে ( ১ টা অপরটা থেকে বেশি শক্তিশালী) মাঝখানে বিশেষভাবে লোহা ঝুলিয়ে দিলে লোহার গতি হবে শুধুই স্পন্দন গতি , সরল ছন্দিত স্পন্দন নয় ( কারণ লোহা দোলার সময়ে দুপাশে দুরকম চুম্বক থাকার দরুন দুপাশে একই ত্বরণ সৃষ্টি হয় না; তাই সরল ছন্দিত স্পন্দনের শর্ত পূরণ হয় না)।
এবার আসি নির্মম বাস্তবতার কথায়, ফিজিক্স বড়ই নির্মম ও ছলনাময়ী।
সরল ছন্দিত স্পন্দনের সময়ে যেমন স্প্রিঙের ক্ষেত্রে ধরা হয় স্প্রিং এর কোন ওজন নেই, সম্পূর্ণ স্তিতিস্থাপক; সরল দোলকের ক্ষেত্রে , বইএর ভাষাতেই বলি , “একটি ভারী আয়তনহীন কণাকে ওজনহীন, নমনীয় ও অপ্রসারণশীল সুতা দিয়ে……” – কিসব আজগুবি কথা 😮 !! ভারী আবার আয়তনহীন 😮 !! ওজন নেই 😮 !!! সম্পূর্ণ নমনীয় 😮 !! অপ্রসারণশীল 😮 !! সব প্যারাডক্সিকাল কথা বার্তা!! এজন্যই বলা হয়, Physics is nothing but a Paradox. যাই হোক, এধরনের অবান্তর কথার পিছনে কোন ষড়যন্ত্র লুকিয়ে নেই, উদ্দেশ্য তত্ত্বীয়ভাবে সূত্র মেলানো ।
বলতে না চাইলেও বলতে হচ্ছে যে, কিছু টেকনিক্যাল ঝামেলার ( ঘর্ষণ, ওজন, বাতাসের বাঁধা, চৌম্বক ক্ষেত্র ইত্যাদি) কারণে বাস্তবে সরল ছন্দিত স্পন্দনের কো্ন অস্তিত্ব নেই । তার মানে এই নয় যে সবই কাল্পনিক; কিছু ত্রুটির কারণে সত্যিকারের সরল ছন্দিত স্পন্দন পাওয়া যাবে না ঠিকই। কিন্তু তারপরও এই বাস্তব জীবনের ত্রুটিপূর্ণ সরল ছন্দিত স্পন্দনের উপরেই আমাদের মহাবিশ্ব গড়ে উঠেছে; বিস্তৃত হচ্ছে; আমরা বেঁচেও আছি এরই কল্যাণে। তাই সম্পূর্ণ অস্বীকারেরও উপায়ও নেই সরল ছন্দিত স্পন্দন কে ।
সরল ছন্দিত স্পন্দন নিয়ে এই টুকুই। পরিশেষে আবারো বলছি, বাস্তবে সরল ছন্দিত স্পন্দনের কোন অস্তিত্ব নেই; সত্যিই। কিন্তু………
কিন্তু সরল ছন্দিত স্পন্দন ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন সুদূর আমেরিকা থেকে 😮 !! যেতে সময় লাগবে মাত্র 43 মিনিট 😮 !! কীভাবে? এভাবে…
Recommendation:
- সরল ছন্দিত স্পন্দনের বিভিন্ন বিষয়গুলো পরীক্ষা করতে সাইটে ঢুঁ মারতে পারেন…
- যারা HTML ও CSS এ দক্ষ, তারা ওয়েব-পেইজেই সরল ছন্দিত স্পন্দন দিয়ে মজা করতে পারেন… দিক নির্দেশনা
Reference:
- Khaled Mosharraf Mukut
- Chamak Hassan
- Nishom Sarkar
- Google.com :p
অনুভুতি ভালই।সরণ ত্ব্ররণের সমানুপাতিক এবং বিপরীত মুখি এবং সর্বদা সাম্যবস্থান অভিমুখি।কেন?
যখন সর্বোচ্চ বিস্তারে পৌছে আবার সাম্যবস্থানের দিকে ব্যাক করে তখন কেম্নে সরণ ত্বরণের বিপরীত দিকে হয়?
আমাদের শর্ত ছিল -“ত্বরণ সর্বদা একটি নির্দিষ্ট বিন্দু অভিমুখী ও এর মান *সাম্যাবস্থান থেকে* সরণের সমানুপাতিক ও দিক বিপরীতমুখী”।
প্রথমে ২য় প্রশ্নের উত্তরে আসি, শর্তানুযায়ী সরণের দিক বিপরীত হয় কেবল তখনই যখন সাম্যবস্থান থেকে কণা যায় (অতিক্রম করে), সর্বদা সরণের দিক বিপরীত , এমনটা নয়।
আর ১ম প্রশ্নের সবচেয়ে ভাল ব্যাখ্যা দিয়েছেন চমক হাসান ভাইয়া,সরাসরি তার কথাই আছে ‘সরল ছন্দিত স্পন্দন-১’ এ ( http://shoshikkha.com/?p=911 )
এবারে নিজের মত করে বলি , একটু গানিতিকভাবেঃ
সরল ছন্দিত স্পন্দনের সমীকরণ, y = Asin ωt [ এ ব্যাপারে তো কোন সন্দেহ নেই, আমরা অন্য কোন সূত্রের সাহায্য ছাড়াই এটা প্রমাণ করেছি, ১ম পর্বে ]
এই y হল সরণ, সরণ কে একবার অন্তরীকরন(dy/dx) করলে বেগ, আবার অন্তরীকরণ করলে ত্বরণ(a) পাব,
v = ω A cos ωt
a = – A ω^2 sin ωt = – ω^2.y অর্থাৎ,
a = – ω^2. y এখানে যেহেতু ω ধ্রুবক (কম্পাঙ্ক ধ্রুবক তাই কৌণিক বেগও ধ্রুবক, ω=2πf ),
অতএব , a α –x ( ত্বরণ সরণের সুমানুপাতিক ও বিপরীত)
এই হল গাণিতিকভাবে প্রমাণ। তবুও লজিকালি একটু খটকা লাগলে চমক ভাইয়ের ব্যাখ্যা দেখুন। চিন্তা করুন এইভাবে, কণা সাম্যাবস্থানের দিকে আসছে , কিন্তু বেশি বেগ থাকার কারণে সাম্যাবস্থানে আসার পরও বেগ থামাতে পারে না সামনে চলে যায়, কিছুদুর যাওয়ার পর থেমে যায় ( উল্টো দিকে ত্বরণের কারণে ) , তারপর আবার ফিরে আসে এবং একই কাহিনী আবার ঘটে।
ভাই যখন অতিক্রম করে যায় তখন সুত্র খাটে। কিন্তু y=asinwt সুত্রানুযায়ী ত যেকোন মুহুর্তের সরণ অর্থাত ফিরে আসার টাইমের সরণ কি কাউন্ট হচ্ছে না?
গাণিতিক ভাবে ত ঠিকই আছে।কিন্তু a œ -y হলে আমার প্রশ্ন সাম্যবস্থানের দিকে ফিরে আসার সময়ে যেসব y আছে সেগুলো কি উপরের সুত্রে বসছে না?তাইলে কেমন যেন ভাই কাপ ঝাপ লাগতেছে।বুঝায়ে মাথা টা ঠান্ডা করে দেন ভাই।
আর চমক হাসান সুত্র টাকে সুন্দর করে বোঝার মত উপস্থাপন করেছেন তবে কেন এমন হয় এইটা বলেন নি?
অন্যরকম পাঠশালার পদার্থব ভিডিওগুলো দেখতে পারেন । https://www.youtube.com/playlist?list=PLxSt9YDBipm593Taxjxo_aUf8ILwKpUDl
অন্য রকম এও আমার উপরের প্রশ্নের ব্যাখ্যা নেই।
আপনার বিভ্রান্তির মুল কারণ হচ্ছে ভেক্টর বিবেচনা না করা। ভেক্টর রাশি তে ভেক্টর বিবেচনা করা আবশ্যক?
ত্বরণ ও সরণ উভয়ই ভেক্টর রাশি। তাই এদের ব্যবহারের সময় দিক বিবেচনা করতে হবে, তাই আমাদের প্রথমেই যেকোন একদিককে ধনাত্মক ধরে নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে, সাম্যাবস্থানের দিকে ধনাত্মক ধরা হয়েছে, তাহলে সাম্যাবস্থান থেকে দূরে যাওয়ার সময় ঋণাত্মক হবে; যে কোন ভেক্টর রাশিই।
a তথা ত্বরণ সর্বদা সাম্যাবস্থানের দিকে হয় , তাই a সবসময়ই ধনাত্মক হবে; সকল কেস এই।
a α –y এই শর্ত সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কীভাবে? দেখুন…
case-1:কণা সাম্যাবস্থানের দিকে আসছেঃ যেহেতু সাম্যাবস্থানের দিক ধনাত্মক তাই এখানে সরণ = y ( ধনাত্মক) । ফলে মুল শর্ত অনুযায়ী, a α – (y) বা, a α –y (ত্বরণ যেদিকে সরণ তার বিপরীত দিকে)
case-2:কণা সাম্যাবস্থান থেকে দূরে যাচ্ছেঃ যেহেতু সাম্যাবস্থানের দিক ধনাত্মক এবং কণা সাম্যবস্থানের বিপরীত দিকে যাচ্ছে; তাই এখানে সরণ = -y (ঋণাত্মক)। ফলে মুল শর্ত অনুযায়ী, a α – (-y) বা, a α y (ত্বরণ যেদিকে সরণও সেদিকে)
এখানে উভয় কেস এই আমরা মুল শর্ত a α –y প্রয়োগ করেছি এবং দেখলাম দুই কেস এ দুই রকম ফলাফল আসছে; এটাই তো হওয়ার কথা। কারণ বস্তু একবার সাম্যাবস্থানের দিকে আসছে আরেকবার দূরে যাচ্ছে; সরণ ভেক্টর রাশি বিধায় ২ রকম ফলাফল হবে।
তবে কখন কী হবে এটা মাথায় রাখার দরকার নেই। আপনি সকল ক্ষেত্রেই a α –y ব্যবহার করতে পারেন (ঠিক যেমন উপরের ২ কেসে করেছি) এবং দিক বিবেচনা করে মান বসালে সহজেই পেয়ে যাবেন কখন কোন ঘটনা ঘটবে ( ত্বরন-সরন একইমুখি / বিপরীতমুখী) উপরের মত করে।
তাও আপনার এটা নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারে y=asinwt এই সূত্র সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা (এখানে তো – চিহ্ন নেই)। হ্যা এটিও সব কেসেই প্রযোজ্য।
এখানেও ভেক্টর বিবেচনায় আনতে হবে। কৌণিক বেগ একটি ভেক্টর; তাই আমরা ধরে নিচ্ছি যখন সাম্যাবস্থা্নের দিকে যাওয়ার সময় কৌণিক বেগ ধনাত্মক , তাহলে সাম্যাবস্থান থেকে বিপরীত দিকে যাওয়ার সময়ে কৌণিক বেগ ঋণাত্মক।
case-1:কণা সাম্যাবস্থানের দিকে আসছেঃ এই কেস এ , কৌণিক বেগ W ধনাত্তক ; তার মানে সূত্র দাড়াচ্ছে y=asinwt
case-2:কণা সাম্যাবস্থান থেকে দূরে যাচ্ছেঃ এই কেস এ , কৌণিক বেগ W ঋণাত্মক; তার মানে সূত্র দাঁড়াচ্ছে y=asin(-wt)= -asinwt
এবার কী বোঝা গেল যে এই সূত্র সব কেস এই খাটানো যায়; যদিও ফলাফল ভিন্ন আসে ( ভিন্ন আসবেই তো, কারণ কণা এর গতিপথের মাঝখানে দিক বদলাচ্ছে; দিক বদলালে চিহ্ন ও বদলিয়ে যাচ্ছে)।
+ – নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছুই নেই; দিক বদলিয়ে যায় বলে কোন কেস এ + কোন কেস এ – ব্যবহৃত হয় ( উপরের মত করে)
ধন্যবাদ
shm এর বৈষিষ্ট্যা হল সরণ ত্বরণের বিপরীত।সেটা ত প্রতি মুহুর্তেই হবে তাই না। এজন্যে ফর্মুলায় নেগেটিভ চিহ্ন এসেছে।এখন আবার দেখাচ্ছেন সরন ত্বরণ একই দিকে।এইটা ত মূল নিয়ম কে লঙ্ঘন করে তাই না।আপনি আগেই ঋণাতমক চিহ্ন দিয়ে এর পর দিক বসালে সেটা ত লজিক্যাল হল কি?
সাম্যাবস্থার দিক যদি পজিটিভ ধরি তাইলে সব সময়ি ত্বরণ এর দিক পজিটিভ ।কিন্তু সরণের দিক সাম্যাবস্থার সাপেক্ষে সব সময় বিপরীত কি?
আর সুত্র দেখা যাচ্ছে দুই কন্ডিশনে দুই রক্ম ফলাফল আসছে ।সুত্র এর একটা ব্যাপার নিয়েই ত খটকা ।এখন আপনি আগেই ধরে নিলেন a proportional to – y তাহলে হয় না।
একে একে আপনার প্রতিটি লাইন ব্যবচ্ছেদ করা হচ্ছেঃ
shm এর বৈশিষ্ট্য সরণ ত্বরণের সমানুপাতিক; আর সরণ ত্বরণের বিপরীত তখন, যখন কণা সাম্যাবস্থান থেকে যায়(আরও একবার সংজ্ঞা দেখুন পোস্ট/বই থেকে),প্রতি মুহূর্তে বিপরীত হবে এমন কথা কোথাও বলা নাই।
এ কারণে ফর্মুলায় নেগেটিভ আসে নি, ঋণাত্মক চিহ্ন বসানো হয়েছে এই কারণে যে, সাম্যবস্থানে থেকে যাওয়ার সময়ে ত্বরন সরণের বিপরীত। এবং আমরা কণার গতি নির্ণয়ের সাধারণ সূত্র নির্ণয়ের জন্য সাম্যাবস্থান থেকেই হিসেব করি(কনভেনশনাল)। আর আগে ঋণাত্মক চিহ্ন হল সূত্রের (হুকের) চিহ্ন এটা সব খানেই ঋণাত্মক হবে, এবং পরে দিক বসানোর সময় তো অবস্যই দিকের চিহ্ন সহই বসাব ( সুত্রে ঋণাত্মক চিহ্ন আছে, তাই বলে পরে দিকের হিসেবে চিহ্ন বসানো যাবে না, এমন তো না); এবং a α –y এই শর্ত যে সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তা আমি পোস্টে এবং আপনার আগের প্রশ্নের উত্তরেও দেখিয়েছি, গানিতিকভাবে লজিকালি সব ভাবেই দেখিয়েছি। এবং সেই ফলাফল আমাদের বাস্তব জীবনের ফলাফলের সাথে হুবহু মিলে যায়।
সাম্যাবস্থার দিক যদি পজিটিভ ধরি তাহলে সব ক্ষেত্রে ত্বরণ এর দিক পজিটিভ, কিন্তু সব খানে সরণের দিক সাম্যাবস্থানের সাপেক্ষে বিপরীত নয়। এ জন্যই তো আমরা সুত্রে ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করেছি। ফলে সরণ এক সময়ে পজিটিভ হয়ে যাচ্ছে , আবার একটু পর নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে। আপনি সুত্রে পজিটিভ চিহ্ন বসালে কোন ভাবে কি সরণে একবার + আরেকবার – আনতে পারবেন? না কখনই পারবেন না।
সূত্র ২ কন্ডিশনে তো ২ রকম ফলাফলই আসবে।তা নাহলে কন্দিশনের দরকার টা কি? একটা ব্যাপার চিন্তা করে দেখুন, বাস্তব জীবনেও সরল দোলকে ২ রকম ফলাফলই দেখায়( ১ টা কাছে আসার সময়, আরেকটা দূরে যাওয়ার সময়ে) । তাহলে এই ২ ফলাফলকে একটা সূত্র দিয়ে যদি বর্ণনা করতে চাই, তবে অবশ্যই ঋণাত্মক চিহ্ন সুত্রে আন্তেই হবে। এ কারণেই সুত্রে a proportional to – y হয়েছে। এবং এই ধরে নেওয়াটা আমি ধরি নি, ধরেছেন বিজ্ঞানীরা, শিক্ষকরা ; যা যে কোন বৈ খুললেই দেখতে পাওয়া যায়।
সরল দোলকের কথা চিন্তা করি।সাম্যাবস্থান থেকে যখন দূরে যাচ্ছে তখন কোন সমস্যা নেই।কিন্তু যখন সাম্যাবস্থার দিকে আসছে তখন আপনি কি বলবেন?
প্রশ্ন এখানেই তৈরি হচ্ছে।আর আগেই যদি a proportional to – y বসায়ে হিসাব করি তাইলে কেম্নে হয়।আগে ত এক্সপেরিমেন্ট করছে তারপর না সুত্র ডেভেলপ করছে।